বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০১৭

আমার বিদায় সম্বর্ধনা ১৮/০৭/২০১৭

আজ আমার পুরোনো অফিসে আমাকে বিদায় সম্বর্ধনা দেওয়া হ'ল। প্রায় দেড় বছর পর এমন আমন্ত্রণ পেয়ে খুব পুলকিত হয়েছিলাম। গিয়ে দেখলাম সুন্দর আয়োজন। তার চেয়েও বেশি উচ্ছ্বসিত বোধ করলাম পুরোনো সহকর্মীদের দেখে যারা আমার জন্য সাগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের 'দাগ' রম্যরচনার কথা মনে পড়ছিল খুব। সেই এক ভাড়াটে দীর্ঘ দিন ভাড়া থাকার পর বাড়ি ছেড়েছেন, কিন্তু মেঝে থেকে খাটের পায়ার চারটে দাগ প্রায় চিরস্থায়ী হয়ে জেঁকে বসেছে, সেই দাগ তোলা যাচ্ছে না কিছুতেই। অনুষ্ঠানে অনেকেই স্মৃতিচারণা করলেন। দেখলাম প্রায় সকলের মনেই আমার স্মৃতিগুলো অম্লান হয়ে আছে। সঞ্জয়ের স্মৃতিচারণায় আমার আপাত গুরুত্বহীন অথচ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্মৃতিগুলো উঠে এল অবলীলায়। এরকম অনুষ্ঠানে বিদায়ীদের বিশেষ বিশেষ গুনের পরিচয় তুলে ধরার স্বভাবসিদ্ধ প্রবনতার ব্যতিক্রম এখানেও ছিল না। এসবে আমার মন ছিল না। চোখ পড়ে ছিল পেছনের চেয়ারে বসা শত অনুরোধেও কিছু বলতে রাজী না হওয়া লক্ষ্মণ সিং-এর দিকে। তার মুখে সেই অনুষ্ঠান চলা কালে কোন আবেগের চিহ্ন মাত্র দেখিনি। আমার স্মৃতিচারণায় যখন লক্ষ্মণ সিং (সিংজী বলতেই আমরা অভ্যস্ত ছিলাম)-এর নাম বারবার উঠে আসছিল তখনও তার মধ্যে বিন্দুমাত্র আবেগ প্রবণতা লক্ষ্য করিনি। অফিসের নিয়মানুগ কাজের বাইরে আমার যে নিজস্ব একটা বিচরনক্ষেত্র আছে, দেখলাম সে খবর অনেকেই রাখেন এবং দেখেনও। বিভিন্ন জনের স্মৃতিচারণায় এই কথাগুলো যখন উঠে এল, তখন মনে হ'ল যাক সরকারী কাজের গতানুগতিকতা ছাড়াও সরকারী অফিসের অনেকেই অনেক খবর রাখে। আশ্বস্ত হলাম এই ভেবে যে অস্থায়ী বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চ'লে গেলেও অন্তত স্থায়ী একটা দাগ রেখে যেতে পেরেছি। হাজার মোছামুছি করেও দাগটা তোলা যে সহজ হবে না সেটা নিশ্চিত হলাম অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে। নির্জনে লক্ষণ সিং আমার পাশে এসে দাঁড়াতেই মুহূর্তে পালটে গেল তার মুখচ্ছবি। আচমকা মেঘ নেমে এল মুখে এবং সেই মেঘ থেকে ............... বাড়ি ফিরে এলাম বৃষ্টিতে ভিজে। মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম স্মৃতির কোন ওজন হয় না। তাই অনায়াসেই তা বয়ে চলা যায়। সত্যিই পারব তো ?
কথাগুলো লিখতে গিয়ে আমার আগে লেখা (ছাপার অক্ষরেও বেরিয়েছিল একদা) স্কুলের স্মৃতি মনে পড়ল।
সমীরণবাবুঃ অ.না.ক.
ক্লাসে মাস্টারমশাইয়ের রক্তচক্ষু, বেত্রাঘাত, দু’আঙুলের মধ্যে পেন্সিল ঢুকিয়ে চাপ দেওয়া, দু’হাতে থান ইট চাপিয়ে নিল ডাউন বা বিভিন্ন ধরণের কষ্টকর শাস্তির ভয়ে ত্রস্ত হওয়ার প্রবণতা ছাত্রদের মধ্যে থাকেই । আবার এসব উপেক্ষা করে উল্টে মাস্টারমশাইদের বিড়ম্বনার কারণ হওয়া ডানপিটে ছাত্রের সংখ্যাও কম নয় । যেমন আমাদের ক্লাসের পার্থ আর অসীম বেত্রাঘাতে নিপুন কার্ত্তিক স্যারকে আড়াল থেকে বিকৃত স্বরে ‘ট্যারা কার্ত্তিক’ ব’লে পালিয়ে যেত প্রায়ই । স্যার ধরতেও পারতেন না । তবে আমাদের ইংরেজি স্যার সমীরণ বাবু ছিলেন ছিলেন সত্যিকারের কড়া, যদিও শেষ পর্যন্ত তাঁকেও পার্থদের কাছে হার মানতে হয়েছিল । একসময় আমাদের কাছে তো বটেই, অন্যান্য মাস্টারমশাইদের কাছেও তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক মজার চরিত্র ।
সমীরণ বাবু একসময় ছিলেন প্রেসিডেন্সির ইংরেজির কৃতি ছাত্র । ফর্সা, লম্বা চেহারা । মুখে সর্বদা পাইপ । কোট-টাই পড়া একদম সাহেবদের মত ফিটফাট চেহারা । একটা ইংরেজি কবিতা শেষ করতে তাঁর লেগে যেত মাসখানেক । স্বভাবতই সিলেবাস শেষ হ’ত না । কবির জীবনী শেষ করতে প্রায় মাস কাবার । পড়াতে পড়াতে প্রসঙ্গক্রমে নিজেই গান গাইতেন (তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ভালো গাইতে জানতেন), অভিনয় করতেন । এহেন সমীরণ স্যারের ক্লাসে দেখা যেত ৮০ শতাংশ ছাত্র উধাও । না, পড়া না পারার ভয়ে নয়, এমনকি শাস্তি পাবার ভয়েও নয় – কারণ তাঁর পড়ানোর ধরণ হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র ভালো ছাত্রের কাছে ভালো লাগত, বাকীরা বিন্দুমাত্র আনন্দ পেত না । তাঁর পড়ানো শুরু হওয়া মাত্র বিরক্ত ছাত্রদের মধ্যে শুরু হ’ত চঞ্চলতা । সামান্য অসহিষ্ণুতাও সমীরণবাবু সহ্য করতে পারতেন না, কারোও মধ্যে অমনোযোগিতা দেখলেই দুগালে বসাতেন টেনে থাপ্পর । পার্থ বসত একদম শেষ বেঞ্চে ঠিক দরজার পাশে । স্যার পড়ানো শুরু করার পর স্যারের অলক্ষ্যে পার্থ প্রায়ই বেরিয়ে যেত ক্লাস থেকে । একদিন স্যারের নজরে পড়ে গেল । পার্থ বেরিয়েছে – স্যারও বেরিয়ে পার্থকে হাতেনাতে ধরার উদ্যোগ নিচ্ছেন । বুঝতে পেরে পার্থ দোতলার বারান্দা দিয়ে দৌড় লাগাল । নাছোড়বান্দা স্যারও শুরু করলেন ওর পেছন পেছন দৌড় । দোতলা থেকে একতলা – স্যারও সমানে দৌড়ে চলেছেন । স্যারকে নিরস্ত করার জন্য অফিসরুম থেকে অন্যান্য স্যারেরাও ছুটে এলেন । কোনরকমে তাঁকে শান্ত করা হ’ল । ততক্ষণে পার্থ কিন্তু পগার পার । ফর্সা টুকটুকে সমীরণবাবুর মুখ তখন রাগে লাল । হেডস্যারের কাছে নালিশ হ’ল । পরদিন হাতে পায়ে ধরে পার্থর শাস্তি লাঘব হ’ল । এরপর থেকে ক্লাসে বসে প্রায়ই আমরা শুনতে পেতাম দুপদাপ শব্দ । দেখা যেত অনেকেই সমীরণবাবুকে উত্তক্ত করার ক্ষেত্রে পার্থর অনুসারী হয়ে উঠেছে । সমীরণবাবু দৌড়চ্ছেন আর তাঁর সামনে দৌড়চ্ছে অন্য কোন ছাত্র । এ দৃশ্য হামেসাই চোখে পড়ত ।
তবে সমীরণবাবুর পড়াশোনার পরিধি ছিল তুলনাতীত । ইংরেজি সাহিত্যে তাঁর জ্ঞান ছিল অপরিসীম । হয়ত আমাদের মত সাধারণ মানের ছাত্রদের পক্ষে তা হজম করা কঠিন ছিল বলেই তাঁকে নিয়ে মজা করেছি । কিন্তু এখন বুঝতে পারি তিনি কি বিরাট মাপের মানুষ ছিলেন ।

রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৭

বেঁচে থাকার দাম

বেঁচে থাকার দামঃ অ.না.ক. ১৭/০৭/২০১৭

ঠাণ্ডা ঘরে বিলিতি চায়
রেলের ধারে অবাধ চোলাই
সবার লক্ষ্য মাতা নেশায়।

গোরু ছাগল শুয়োর মোষ
ইচ্ছে মতন খেতে কি দোষ ?
পেটের সঙ্গে হয়না আপোষ।

অন্তরে কেউ রহিম বা রাম
আসল কিন্তু জীবন সংগ্রাম

সবচে বেশি বেঁচে থাকার দাম। 

বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭

ভিক্ষাবৃত্তির কি অবসান হবে না ?

ভিক্ষাবৃত্তির কি অবসান হবে না ? অ.না.ক. ০৬/০৭/২০১৭
আমার মত আর সকলেই নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন বাড়িতে বাড়িতে ভিখারির আনাগোনা প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। আমি শহুরে অভিজ্ঞতার কথা বলছি। গ্রাম গঞ্জের অভিজ্ঞতা, আমার মনে হয় কম-বেশি একই রকম। এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে ভিখারির সংখ্যা বিষ্ময়কর ভাবে হ্রাস পেয়েছে। থালা হাতে বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে আর্ত কন্ঠে খাবার বা পয়সা চাওয়া ভিখারি মেলা বিরল। পথে-ঘাটে, ট্রেনে-বাসে যদিও বা মেলে, তাদের বেশিরভাগই শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারনে ভিক্ষা চান। কর্মক্ষম মানুষের বেঁচে থাকার ন্যুনতম চাহিদা মেটানোর মত কাজের অভাব নেই, মানুষের মনে এই সচেতনতা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি অহেতুক সহানুভূতিশীল হওয়ার প্রবণতাও অনেকাংশে কমে যাওয়ায় ভিখারির আকুল সাহায্য প্রার্থনা বিফলে যায়। এভাবেই ভিক্ষাবৃত্তি ক্রমহ্রাসমান। না, ভিক্ষাবৃত্তি পুরোপুরি বন্ধ হয়নি, সত্যিকারের অসহায় মানুষ এখনও আছেন, ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়া তাদের গত্যন্তর নেই। অনেক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আছেন যাদের দেখলে সত্যিই মায়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায় অনেকক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধকতা আসলে অভিনয়। আমি নিজেই আবিষ্কার করেছি রাস্তায় স্বাভাবিকভাবে হেঁটে চলে বেড়ানো এক ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ অন্ধ সেজে ট্রেনের কামরায় ভিক্ষা করতে। হ্যাঁ, মানতেই হবে ভিক্ষাবৃত্তি ন্যুনতম বিনিয়োগ, পরিশ্রম এবং আয়করবিহীন উপার্জনের সহজ পন্থা। প্রয়োজন শুধু অভিনয়ের দক্ষতা। হাতে দগদগে ঘা নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভিক্ষা করতে আসা লোকটার অভিনয়টা যথাযথ হ’লে তবেই মিলবে সাহায্য। আসলে ঘা টা যে মেক-আপ সেটা বুঝে গেলেই তো সব শেষ। তথ্য বলছে, এখন যে ভিখারিদের দেখা মেলে তাদের অধিকাংশই ভন্ড। এই আয়করবিহীন উপার্জনের উপায় হিসাবে ভিক্ষাবৃত্তিরাষ্ট্রীয় ভাবে আইন প্রণয়ন করে বন্ধ করে দেওয়া উচিত, অবিলম্বেই। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে ভিখারি মুক্ত সমাজ গঠনের জন্য সে দেশের সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমাদের দেশে কি ভিক্ষাবৃত্তির মত সামাজিক অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবার কোন পদক্ষেপ নেওয়া হবে না ? উদ্যোগ আর মানসিকতার যৌথ প্রয়াসে আমাদের দেশও ভিক্ষাবৃত্তির অভিশাপ থেকে মুক্ত হ’তে পারে। ভিখারি মুক্ত সমাজ গঠনের উদ্দেশ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের সময় হয়েছে। প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রণয়নেরও প্রয়োজন আছে।     
মূলত এক শ্রেণির মানুষ আমাদের সমাজে ভিখারি বা ভিক্ষাবৃত্তিকে জিইয়ে রাখার কাজে ব্যস্ত। এরা অন্যকে করুনা ক’রে আত্মতুষ্টি আর পুণ্যার্জন করেন। সুতরাং শয়ে শয়ে করুনা প্রার্থীরা ভিখারির বেশে হাজির। মন্দির-মসজিদগুলিতে এই কারনেই ভিখারিদের সংখ্যাধিক্য। এরা ধর্মের নামে ভিক্ষা করে - কেউ আল্লাহর বান্দা, কেউ ভগবানের দাস। হিন্দুধর্মে ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ না-হলেও ইসলাম ধর্মে কিন্তু নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ কী নিষিদ্ধ না সেটা বড়ো কথা নয় ভিখারি কিন্তু রয়েই গেছে – ভিক্ষাবৃত্তির অবসান কিন্তু হয়নি। স্মার্ট ফোন ব্যবহার করলেও ভিক্ষাবৃত্তিকেই তারা লাভজনক বিনা-পরিশ্রমের পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছে। এমনকি ভিক্ষাবৃত্তিতেও চলে দাদাগিরি। ছোটো ছোটো শিশু,অস্থিচর্মসার বৃদ্ধ-বৃদ্ধা,রুগ্ন মহিলা এবং শারীরিক অক্ষম মানুষগুলোর ভিক্ষের জন্য করুণ আর্তিতে বেদনাহত হয়ে বা অনেক সময় পূণ্যলাভের আশায় আমরা কিছু সাহায্য করি। কিন্তু আমরা যেটা অনেকেই জানি না যে ওই ভিক্ষার অর্থ যা আমরা ভিখিরিটির হাতে তুলে দিলাম তাতে হয়তো তার কোনোই অধিকার নেই। প্রসঙ্গত বলা প্রয়োজন, ভিক্ষাবৃত্তি আর সাহায্য প্রার্থনা আক্ষরিক অর্থে দুটি ভিন্ন। যদিও সাহায্য প্রার্থনার নাম ক’রে রাস্তা ঘাটে যা চলে তা ভিক্ষাবৃত্তিরই নামান্তর। পাড়ার একটি বাচ্চার ক্যানসারের চিকিৎসার খরচের জন্য বাচ্চাটির একটি ছবি দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধ’রে চলে এই সাহায্য প্রার্থনা। আবার মৃত বাবার শ্রাদ্ধের খরচ জোগাতে একটি ছেলেকে আশৌচের পোষাক প’ড়ে বিভিন্ন জায়গায় সাহায্য প্রার্থনা করতে দেখেছি মাসের পর মাস। মিথ্যের আশ্রয় নেওয়া এই সমস্ত মানুষের জন্য প্রকৃত সাহায্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়।   
মানুষের মধ্যে আত্নসন্মান আর আত্নমর্যাদা বোধের উন্মেষ না ঘটলে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ হওয়া কঠিন। নিজের সাধ্যের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখার মানসিক শক্তি তৈরি হ’লে তবেই অন্যের মুখাপেক্ষিতা দূর হয়। এই সচেতনতা মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করার সামাজিক উদ্যোগ নিলে তবেই একদিন নির্মূল হবে ভিক্ষাবৃত্তি।  
      নিঃসন্দেহে দারিদ্র ভিক্ষাবৃত্তির অন্যতম কারণ। দরিদ্রতার কষাঘাতে পিষ্ট হয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে অনেকেই ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়। কিন্তু সত্যি বলতে কি বর্তমানে বিভিন্ন সরকারী, বে-সরকারী প্রকল্প আছে যেগুলির সদ্ব্যবহার করার মানসিকতা থাকলে বাস্তবিক কাউকেই বোধ হয় ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করতে হয় না। তবে অস্বীকার করার উপায় নেই, স্বভাব আমাদের সমাজের আরোও মারাত্মক ব্যাধি ।    


শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০১৭

অতিথি

অতিথি: অ.না.ক. ২৪/০৬/'১৭

যখন আসার কথা ছিল তখন এলে না
কেন তুমি ভাঙছ  রীতিনীতি?
এখন থেকে স্বজন নয়,
বলব তোমায় আমার অতিথি।

সোমবার, ১২ জুন, ২০১৭

কোনটা তোমার প্রিয়?

কোনটা তোমার প্রিয়?  অ.না.ক. ১২/০৬/'১৭

চোখ ঝলসানো প্রখর রোদের তাপ
নাকি স্নিগ্ধ সজল বৃষ্টিধারা,
নাকি রোদের সাথে মেঘের লুকোচুরি?
কোনটা তোমার প্রিয়?
এখন যদি নাও পার
একসঙ্গে চলার পথের প্রান্তে এসে
উত্তরটা দিও।

সোমবার, ২৯ মে, ২০১৭

বৃষ্টি তুমি একলা কেন ?

বৃষ্টি তুমি একলা কেন: অ.না.ক.২৫/০৫/২০১৭

বৃষ্টি তুমি একলা কেন, সঙ্গে কোথায় ঝড়?
নাকি আগেই ঝড় থেমেছে, তুমি অত:পর?
নাকি আছে ঝড়ের আভাস সেই কারনেই তুমি
ভাসিয়ে দিচ্ছ তোমার জলে শুষ্ক যত ভুমি?
শান্ত বাতাস মেশে যখন তোমার ধারার সাথে
শান্তিতে মন জুড়িয়ে যায়,
তবু ঘুম আসে না রাতে
যখন আমার চোখের জলে বালিশ ভেজে
টের পাই না মনের মেঘে ঝড়ের কারন কে যে।

শুক্রবার, ১৯ মে, ২০১৭

রাজনীতি

রাজনীতি: অ.না.ক. ১৯/০৫/'১৭


নীতির রাজা রাজনীতি
নাকি এটা রাজার নীতি?
সংশয়ে মন সন্দিহান
নীতির মূল্য হ্রাসমান
প্রমাণ দিচ্ছে পরিস্থিতি।

শনিবার, ৬ মে, ২০১৭

বন্ধুত্ব

                                                                            বন্ধুত্ব : অ না ক
বন্ধুত্ব বলিতে তিনটি পদার্থ বুঝায়। দুই জন ব্যক্তি ও একটি জগৎ । অর্থাৎ দুই জনে সহযোগী হইয়া জগতের কাজ সম্পন্ন করা। আর, প্রেম বলিলে দুই জন ব্যক্তি মাত্র বুঝায়, আর জগৎ নাই। দুই জনেই দুই জনের জগত্। ... ইহা ছাড়া আর একটা কথা আছে—প্রেম মন্দির ও বন্ধুত্ব বাসস্থান। মন্দির হইতে যখন দেবতা চলিয়া যায় তখন সে আর বাসস্থানের কাজে লাগিতে পারে না, কিন্তু বাসস্থানে দেবতা প্রতিষ্ঠা করা যায়।– কথাগুলো বলেছেন রবীন্দ্রনাথ। সত্যিই তো বন্ধুত্ব মানে একটা নতুন জগতের সৃষ্টি । অনেকটা ঢাকের বাঁয়ার মত । যেকোন একজনের অনুপস্থিতি এই নতুন জগৎ সৃষ্টিতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে । জীবনের পথে চলার সময় এই বন্ধুত্বই আমাদের অতুলনীয় পাথেয় । সেই ছোট্ট বেলায় বন্ধু পেলে কান্না থামত, বন্ধু পেলে আনন্দে ভরত মন । তারপর স্কুল, কলেজ সর্বত্র চলেছে বন্ধুর সন্ধান আর সেই বন্ধুত্বের হাত ধরেই চেনা জগতের গণ্ডি পেরিয়ে চলে গেছি অন্য জগতে – কল্পনা আর বাস্তব মেশানো এক অন্য রকম জগৎ । এখন কঠিন জীবনযুদ্ধে অনেক কিছু না পেলেও শুধু বন্ধু পেলে চলে যায়, আবার প্রাপ্তির প্রাচুর্যের মধ্যেও বন্ধু ছাড়া চলে না । বোধ হয় ভার্জিনিয়া উলফ একারনেই বলেছেন, Some people go to priests; others to poetry; I to my friends । তার মানে বন্ধু মানেই সবকিছু – প্রেম, কবিতা, ঈশ্বর । দার্শনিক অ্যারিস্টটল বন্ধুত্বের পরিণাম নিয়ে বলেছিলেন যে বন্ধুত্ব গড়া ক্ষণিকের কাজ, কিন্তু সে ফল ধীরে ধীরে পাকে । বন্ধুত্ব গড়া সহজ, সেটাকে টিকিয়ে রাখা ততোটাই কঠিন । নানা তুচ্ছ কারনে বন্ধুত্বের ইতি ঘটে যায় হামেশাই । তাই বন্ধুত্ব অনেকটা দাঁতের মত । দাঁত পড়ে গেলে তবেই বোঝা যায় দাঁতের মর্যাদা । পারিবারিক, অর্থনৈতিক বা সামাজিক অবস্থানের বৈষম্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাঝপথে বন্ধুত্বের অবসান ঘটায় । কিন্তু বন্ধু সবার চায় – ভীষণভাবে চায় – এই উপলব্ধি থেকেই অস্কার ওয়াইল্ড লিখেছেন, I don't want to go to heaven. None of my friends are there. দেশ, ভাষা, সমাজ, জাতি, ধর্ম এসবের বিভিন্নতা অনুযায়ী বন্ধুত্বের রীতিও বিচিত্র । কিন্তু মোড়কের রং যাই হোক, বন্ধুত্বের মৌলিক উপাদানের ভেদ নেই । তবে জীবনে এমন বন্ধু যেন না জোটে যাতে ভলতেয়ারের মত আক্ষেপ করে বলতে না হয় “ঈশ্বর আমাকে বন্ধুদের হাত থেকে বাঁচাও, শত্রুকে আমি নিজেই দেখে নেব” ।

শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭

রক্তদান

বিগত বেশ কিছুদিন ধ'রে প্রায় প্রতিদিনই রক্তদান করে চলেছি। সেই সঙ্গে চলছে টেনিস খেলা। এমনকি মাঝরাতে উঠেও টেনিস খেলতে হচ্ছে। রক্ত নেওয়ার জন্য ডাক্তাররা আসছেন স্বেচ্ছায়। তারা কানের কাছে ক্রমাগত ব'লে যাচ্ছেন,"তোমরা আমাকে রক্ত দাও"। কিন্তু একবারও বলছেন না,"আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব"। এভাবে চলতে থাকলে ব্লাডব্যাঙ্কগুলোতে রক্ত উপচে পড়বে কি না জানা নেই তবে আমি যে ক্রমশ রক্তশূন্যতার দিকে এগোচ্ছি সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত। আর যখন তখন ব্যাট হাতে টেনিস প্র‍্যাক্টিস করতে করতে লিয়েন্ডার পেজ কখনোই হ'তে পারব না, কারন এই টেনিসে বলের বদলে ব্যবহৃত হয় অতিক্ষুদ্র পতঙ্গ। তবে রক্তসংগ্রহকারী ডাক্তাররা আমাদের স্বাধীনতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি না দিলেও স্বাধীনতা আমরা পাই - চুলকাবার স্বাধীনতা - শরীরের প্রায় সব আবরণ খুলে ফেলে সর্বাঙ্গে চুলকাবার অবাধ স্বাধীনতা।
হ্যামিলটন সাহেবের গোসাবা
পশ্চিমবঙ্গে সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার হিসাবে দঃ২৪ পরগণার গোসাবার নাম প্রায় সকলেরই জানা । প্রকৃতির মোহময়ী সুন্দরবনের জল-জঙ্গল, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, কুমীর দেখার টানে আগত প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের অনেকেই অনুসন্ধিৎসু থাকেন পর্যটনকেন্দ্রের নানাবিধ ঐতিহাসিক গুরত্ব অবলোকন করতে । এই হিসেবে শুধু সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার হিসাবেই নয়, গোসাবার একটা ব্যতিক্রমী ঐতিহাসিক ঐতিহ্যও রয়েছে যা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের বিষয় । কিন্তু দুঃখের হ’লেও সত্যি যে, গোসাবায় বিদ্যাধরী নদীর তীরের এই ঐতিহাসিক নিদর্শন সার্বিক অবহেলায় ক্রমশ গুরুত্ব হারাচ্ছে ।
১৯০৩ সালে স্যার ড্যানিয়েল হ্যামিলটন সাহেব সুন্দরবনের গোসাবায় এসেছিলেন সেখানকার মানুষের দুঃখ- দুর্দশা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করার জন্য । ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে জল-জঙ্গল ঘেরা গোসাবা, রাঙ্গাবেলিয়া ও সাতজেলিয়া দ্বীপ (১২,২৫৭ বিঘা জমি) ইজারা নিয়ে মানব কল্যাণে সমবায় আন্দোলন শুরু করেছিলেন সম্রাট আশোকের আদর্শে অনুপ্রাণিত স্কটল্যান্ডের এই মহামতি । এই মানব কল্যাণের স্বীকৃতি হিসাবেই ইংল্যান্ডের রাজা ৭ম এডওয়ার্ড ১৯০৬ সালে তাঁকে ‘নাইট’ উপাধি দেন এবং তিনি পরিচিত হন স্যার ড্যানিয়েল হ্যামিলটন হিসাবে । প্রজাদের আর্থিক মানোন্নয়নের প্রয়োজনে তিনি এই অঞ্চলে এক টাকার কাগজের নোটের প্রচলন শুরু করেন (৮ ফেব্রুঃ ১৯৩৬) । নিজের পরিবারের সদস্য ও অতিথিদের থাকার জন্য গোসাবায় এক কিলোমিটার ব্যবধানে দুটি বাসস্থান নির্মিত হয় যার একটি ‘বেকন বাংলো’ এবং অন্যটি ‘হ্যামিলটন বাংলো’ নামে পরিচিত। মায়ানমার থেকে আনা মূলবান সেগুন কাঠের তৈরি দর্শনীয় এই বাংলো মূল্যবান ঐতিহাসিক নিদর্শন হলেও প্রশাসনিক অবহেলায় পর্যটকদের ততটা দৃষ্টি আকর্ষণ করে না । গোসাবা একদা গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদধূলিধন্য হয়েছিল । ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৩২ সালে হ্যামিলটন সাহেবের আমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ গোসাবায় উপস্থিত হয়েছিলেন । এই হিসেবে এক ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান হিসাবে গোসাবা পর্যটকদের কাছে অনেক আকর্ষণীয় হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি । বেকন বাংলোর সামনে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্রনাথের মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে অযত্নে । বাংলোর দেওয়ালে রং-এর প্রলেপ নেই । ক্রমশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মহার্ঘ সেগুন কাঠ । ‘হ্যামিলটন বাংলো’য় হ্যামিলটন সাহেবের স্মৃতিবিজড়িত জিনিসপত্র এবং তাঁর আবক্ষ মূর্তি সবই অবহেলায় ধ্বংসের মুখে ।বাংলো রক্ষণাবেক্ষণের উদ্দেশ্যে গঠিত ট্রাষ্টি বোর্ড, স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু ক’রে জেলা প্রশাসন এমনকি রাজ্য সরকার সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় গোসাবা শুধু সুন্দরবন নয়, ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান হিসাবেও পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রে উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করতে পারে ।

বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০১৭

সমব্যথী

পাশে থেকে আঁখি জল মুছে যে হয় চিরসাথী
অসময়ের বন্ধু হয়ে সেই হয় সমব্যথী ।
অ  ক ২৯/০৩/২০১৭

তোমার নখের বিষ

তোমার নেলপালিশ মাখা নখ
যখন আমার মাথার চুলে বিলি কাটত
আরামের অনুভূতিতে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়তাম
তখন বুঝিনি, এখন বুঝি তোমার নখের কি বিষ
কারন তোমার আচড়ে দেওয়া ক্ষতের জ্বালায়
রাত্রে কিছুতেই ঘুম আসে না আমার।

শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭

কবিতার দেশ

সম্পূর্ণ স্বাধীন একটা দেশ আছে কবিতার
সেখানে কেউ কেউ কবি, কেউ পাঠক তার।
সেখানে ঘৃনা আছে, তবে নেই ধর্মের লেশ
ঘৃনাহীন ধর্মও আছে, এই নিয়ে কবিতার দেশ।

                           অ না ক ২৫/০৩/২০১৭

বুধবার, ২২ মার্চ, ২০১৭

সোমবার, ১৩ মার্চ, ২০১৭

মনে যা আসে তাই লিখি

 মনে যা আসে তাই লিখিঃ অ.না.ক.  ১৪/০৩/২০১৭

মনে যা আসে তাই লিখি প্রাণ খুলে,
ভালো হ'ল না মন্দ সব কিছু ভুলে।
লিখে লিখে খাতা ভরি, লিখি ফেসবুকে,
কেউ বা এড়িয়ে যায়, কেউ পড়ে ঝুঁকে।
কেউ বা লাইক দেয়, কেউ করে মতদান,
এইটুকু পাই ব'লে আনন্দে আটখান।
স্বপ্নটপ্ন দেখি না আমি, লিখি দিনে রাতে,
লেখার লাগাম তাই পরাই না হাতে।
মনে যা আসে তাই লিখি প্রাণ খুলে,
ভালো হ'ল না মন্দ সব কিছু ভুলে।

রবিবার, ১২ মার্চ, ২০১৭

আমার শ্রদ্ধার্ঘে কালিকাপ্রসাদ


দোলের কবিতা ৩ ১৩/০৩/২০১৭

বৃষ্টি বলছে,"পুরোনো রঙ ধুয়ে মুছে করব সাফ,
যাতে নতুন রঙে সব কিছু হয়ে যায় ছয়লাপ"।
একথা শুনে দোল পূর্ণিমা চাঁদ ভীষন সন্দিহান
আমার রঙে রঞ্জিত সব নিমেষেই হবে নাতো ম্লান!

দোলের কবিতা ২ ১২/০৩/২০১৭

এখন আর মাখি না রঙ
রঙ মেখে আর সাজি না সঙ।
নস্টালজিয়ার কবর খুঁড়ে
বিকৃত লাশ দেখি ঘুরে ঘুরে,
সে কি জীবিত আছে আর
যাকে রাঙিয়ে ছিলাম প্রথমবার?

দোলের কবিতা ১ ১১/০৩/২০১৭

আজ সবচে বেশি রঙ মেখেছি আমি
আমার মুখে একটুও রঙ নেই।
পৃথিবীর সব রঙ মিলে মিশে আছে

অন্য কোথাও নয়,শুধু সাদাতেই।

রবিবার, ৫ মার্চ, ২০১৭

আমরা দুজন সাজাহান মমতাজ



আমরা দুজন সাজাহান মমতাজঃ অ.না.ক. ০৬/০৩/২০১৭ 

 

আমরা দুজন মহার্ঘ্য ফ্ল্যাটে সাজাহান মমতাজ



যে মাঠে আমরা প্রেমে মজতাম



প্রোমোটর তার বুঝেছিল দাম



সেখানেই ওঠা বহুতলে আমরা বাসিন্দা আজ ।

রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

ছন্নছাড়া জীবনের নবজন্ম

চলে গেল একটি দিন আজ নিঃশব্দে
- একটি জন্মদিন
লাল কালিতে ছাপা হলুদ মাখা খামে
আগাম ঘোষণা ছিল
একটি ছন্নছাড়া জীবনের নবজন্মের ।
আজ ছিল তার জন্মদিন ।
প্রথম ভূমিষ্ঠ হওয়া আমার চেয়ে
এ বয়সে অনেক নবীন ।
তবুও এদের শান্তিপূর্ণ অনিবার্য সহাবস্থান ।
যে আগন্তুকের সদর্প উপস্থিতিতে
আমার দ্বিতীয় জন্ম হয়েছিল,
সে আজ আমার এক বিছানায়
এক মশারীর সঙ্গী।
জীবনের সব স্বাদ আমরা ভাগ করে নিই ।

মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৭

হেরিটেজের কান্না

হেরিটেজের কান্না - অ.না.ক. ৩১/০১/২০১৭

বৈদ্যুতিন যন্ত্র আজ দেখাচ্ছে তেজ,
ডাকবাক্সগুলো হয়ে গেছে হেরিটেজ।
পর্যটনে আজ দুরন্ত গতির লড়াই,
শম্বুক গতির ট্রাম মরে অবহেলায়।
যদি কান পাত তাজমহলের গায়,
বলতে পার কার কান্না শোনা যায় ?

শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৭

শিত যায় যায়

শিত যায় যায় এবার বরফ গলবে
আসছে গ্রীষ্ম তবে কি আগুন জ্বলবে ?

                                      অ.না.ক. ২৮/০১/'১৭ 

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৭

শিত সকাল



শিত সকালে মুখ দিয়েছি চায়ের কাপে
মনটা কেমন উদাস লাগে উত্তাপে।


                                                    অ.না.. ২৩/০১/২০১৭

শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৭

প্রতিটি মুহূর্ত কাটে তন্দ্রাচ্ছন্ন চোখে

প্রতিটি মুহূর্ত কাটে তন্দ্রাচ্ছন্ন চোখে - অ না ক ১৫/০১/২০১৭


আমার প্রতিটি মুহূর্ত কাটে তন্দ্রাচ্ছন্ন চোখে,
নুয়ে পড়া ঘাড়, একটা বাক্যহীন খিদে
আকাশ আমার কাছে এখন বিস্মৃতপ্রায় অলৌকিক বস্তুর মত ।
আমার দৃষ্টি বাধা পড়ে আছে শুধু নোংরা আবর্জনার দিকে ।
আমার বিচরণ ক্ষমতা নেই, কাঁধে অসহ্য যন্ত্রণা
আমার শরীরের ওপর কে যেন বসিয়ে দিয়েছে
একটা বিশাল ওজনের জগদ্দল পাথর –
মাথা নাড়ানোর সাধ্য নেই আমার ।
কিন্তু সেদিন এসব কিছুর অবসান হ’ল আকস্মিক ভাবে ।
কে যেন বৃষ্টির মত শীতল জল ছিটিয়ে দিল আমার শরীরে
যে জরা আমার শরীরের বর্ণ ধূসরিত করেছিল
সব কিছু থেকে আমি মুহূর্তে মুক্ত হলাম ।
এখন, শেষ পর্যন্ত, আমার সর্বক্ষণের তন্দ্রাচ্ছন্নতা থেকে
আমি সম্পূর্ণ জেগে উঠেছি ।

মুখ চাপা সত্য

 মুখ চাপা সত্য শেষ দিয়ে সত্যের শুরু  নাকি সত্যের চির সমাধি?  নাকি মুখ চাপা সত্যের গোঙানি স্পষ্ট বাক্যে শোনা যাবে একদিন?