অনেকেই ‘সম্মান’ শব্দটিকে
‘সন্মান’ উচ্চারন করতে অভ্যস্ত । টি ভি খুললেই বহু স্বনামধন্য ব্যক্তির মুখে ‘সন্মান’
উচ্চারন করতে শুনবেন । উৎসাহ নিয়ে কারও বক্তব্য শুনতে গিয়ে যখনই বক্তার মুখ থেকে ‘সন্মান’
উচ্চারন শুনি, বক্তার বক্তব্য যত সুন্দরই হোক তৎক্ষণাৎ বক্তার প্রতি অশ্রদ্ধা
জন্মে যায় আমার । এই অভ্যেসটা (বন্ধুবান্ধবরা অনেকে ব’লে থাকে ‘বদভ্যেস’) আমার
দীর্ঘদিনের । বক্তার ‘সন্মান’ উচ্চারনে তাঁর প্রতি আমার অসম্মান জন্মে যাওয়ার
অভ্যেসটা শত চেষ্টাতেও ত্যাগ করতে পারিনি । হাতে গোনা বিশিষ্ট কয়েকজনকে দেখেছি প্রথম প্রথম ‘সন্মান’
বললেও পরবর্তীকালে শুধরে নিয়ে ‘সম্মান’ বলছেন । কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বক্তারা
শব্দটির বানান তথা উচ্চারন নিয়ে মাথা ঘামান না । তার চেয়েও বেশি আশ্চর্যের, কেউ
বক্তাদের (বিশেষ ক’রে বিশিষ্টজন, রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রে) এই ভ্রম সংশোধনের চেষ্টাও
করেন না । কোন লেখা পড়তে গিয়ে যখনই ‘ব্যথা’ শব্দটি ‘ব্যাথা’ হয়ে যায় কিংবা ‘ব্যক্তি’
পরিনত হয় ‘ব্যাক্তি’তে তখনই লেখাটা আর পড়তে ইচ্ছে করে না । এমনকি ছাপার ভুল হলেও
না । খবরের কাগজে, পত্রিকায় (বিখ্যাত থেকে অথ্যাত সর্বত্র)যখন কোন বিজ্ঞাপনে বড় বড়
হরফে ‘ব্যাথা’ শব্দটি ছাপা হয় তখন বিজ্ঞাপনদাতার ওপর নয়, রাগ হয় ওই খবরের কাগজ বা
পত্রিকার সম্পাদকের ওপর । তাঁরই তো উচিৎ এই ভুল সংশোধন করা । ‘এখানে প্রস্রাব
করিবেন না’ বা ‘এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ’ এই বক্ত্যব্যটি লিখতে গিয়ে অন্তত শতকরা
পঁচানব্বই ভাগ দেওয়ালে ‘প্রস্রাব’ শব্দটিকে লেখা হয় ‘প্রস্বাব’ বা এই জাতীয় কোন
ভুল শব্দ । এগুলো আসলে সুন্দর প্রাচীরের গায়ে ঘুঁটে দেওয়ার মত । বাংলা ভাষার
সম্মান রক্ষা করার জন্য এ বিষয়ে আমাদের সকলেরই এগিয়ে আসা উচিৎ বলে আমার মনে হয় ।
অ.না.ক. ০৫/১২/২০১৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন