শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০১৭
বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০১৭
আমার বিদায় সম্বর্ধনা ১৮/০৭/২০১৭
আজ আমার পুরোনো অফিসে আমাকে বিদায় সম্বর্ধনা দেওয়া হ'ল। প্রায় দেড় বছর পর এমন আমন্ত্রণ পেয়ে খুব পুলকিত হয়েছিলাম। গিয়ে দেখলাম সুন্দর আয়োজন। তার চেয়েও বেশি উচ্ছ্বসিত বোধ করলাম পুরোনো সহকর্মীদের দেখে যারা আমার জন্য সাগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের 'দাগ' রম্যরচনার কথা মনে পড়ছিল খুব। সেই এক ভাড়াটে দীর্ঘ দিন ভাড়া থাকার পর বাড়ি ছেড়েছেন, কিন্তু মেঝে থেকে খাটের পায়ার চারটে দাগ প্রায় চিরস্থায়ী হয়ে জেঁকে বসেছে, সেই দাগ তোলা যাচ্ছে না কিছুতেই। অনুষ্ঠানে অনেকেই স্মৃতিচারণা করলেন। দেখলাম প্রায় সকলের মনেই আমার স্মৃতিগুলো অম্লান হয়ে আছে। সঞ্জয়ের স্মৃতিচারণায় আমার আপাত গুরুত্বহীন অথচ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্মৃতিগুলো উঠে এল অবলীলায়। এরকম অনুষ্ঠানে বিদায়ীদের বিশেষ বিশেষ গুনের পরিচয় তুলে ধরার স্বভাবসিদ্ধ প্রবনতার ব্যতিক্রম এখানেও ছিল না। এসবে আমার মন ছিল না। চোখ পড়ে ছিল পেছনের চেয়ারে বসা শত অনুরোধেও কিছু বলতে রাজী না হওয়া লক্ষ্মণ সিং-এর দিকে। তার মুখে সেই অনুষ্ঠান চলা কালে কোন আবেগের চিহ্ন মাত্র দেখিনি। আমার স্মৃতিচারণায় যখন লক্ষ্মণ সিং (সিংজী বলতেই আমরা অভ্যস্ত ছিলাম)-এর নাম বারবার উঠে আসছিল তখনও তার মধ্যে বিন্দুমাত্র আবেগ প্রবণতা লক্ষ্য করিনি। অফিসের নিয়মানুগ কাজের বাইরে আমার যে নিজস্ব একটা বিচরনক্ষেত্র আছে, দেখলাম সে খবর অনেকেই রাখেন এবং দেখেনও। বিভিন্ন জনের স্মৃতিচারণায় এই কথাগুলো যখন উঠে এল, তখন মনে হ'ল যাক সরকারী কাজের গতানুগতিকতা ছাড়াও সরকারী অফিসের অনেকেই অনেক খবর রাখে। আশ্বস্ত হলাম এই ভেবে যে অস্থায়ী বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চ'লে গেলেও অন্তত স্থায়ী একটা দাগ রেখে যেতে পেরেছি। হাজার মোছামুছি করেও দাগটা তোলা যে সহজ হবে না সেটা নিশ্চিত হলাম অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে। নির্জনে লক্ষণ সিং আমার পাশে এসে দাঁড়াতেই মুহূর্তে পালটে গেল তার মুখচ্ছবি। আচমকা মেঘ নেমে এল মুখে এবং সেই মেঘ থেকে ............... বাড়ি ফিরে এলাম বৃষ্টিতে ভিজে। মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম স্মৃতির কোন ওজন হয় না। তাই অনায়াসেই তা বয়ে চলা যায়। সত্যিই পারব তো ?
কথাগুলো লিখতে গিয়ে আমার আগে লেখা (ছাপার অক্ষরেও বেরিয়েছিল একদা) স্কুলের স্মৃতি মনে পড়ল।
সমীরণবাবুঃ অ.না.ক.
ক্লাসে মাস্টারমশাইয়ের রক্তচক্ষু, বেত্রাঘাত, দু’আঙুলের মধ্যে পেন্সিল ঢুকিয়ে চাপ দেওয়া, দু’হাতে থান ইট চাপিয়ে নিল ডাউন বা বিভিন্ন ধরণের কষ্টকর শাস্তির ভয়ে ত্রস্ত হওয়ার প্রবণতা ছাত্রদের মধ্যে থাকেই । আবার এসব উপেক্ষা করে উল্টে মাস্টারমশাইদের বিড়ম্বনার কারণ হওয়া ডানপিটে ছাত্রের সংখ্যাও কম নয় । যেমন আমাদের ক্লাসের পার্থ আর অসীম বেত্রাঘাতে নিপুন কার্ত্তিক স্যারকে আড়াল থেকে বিকৃত স্বরে ‘ট্যারা কার্ত্তিক’ ব’লে পালিয়ে যেত প্রায়ই । স্যার ধরতেও পারতেন না । তবে আমাদের ইংরেজি স্যার সমীরণ বাবু ছিলেন ছিলেন সত্যিকারের কড়া, যদিও শেষ পর্যন্ত তাঁকেও পার্থদের কাছে হার মানতে হয়েছিল । একসময় আমাদের কাছে তো বটেই, অন্যান্য মাস্টারমশাইদের কাছেও তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক মজার চরিত্র ।
সমীরণ বাবু একসময় ছিলেন প্রেসিডেন্সির ইংরেজির কৃতি ছাত্র । ফর্সা, লম্বা চেহারা । মুখে সর্বদা পাইপ । কোট-টাই পড়া একদম সাহেবদের মত ফিটফাট চেহারা । একটা ইংরেজি কবিতা শেষ করতে তাঁর লেগে যেত মাসখানেক । স্বভাবতই সিলেবাস শেষ হ’ত না । কবির জীবনী শেষ করতে প্রায় মাস কাবার । পড়াতে পড়াতে প্রসঙ্গক্রমে নিজেই গান গাইতেন (তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ভালো গাইতে জানতেন), অভিনয় করতেন । এহেন সমীরণ স্যারের ক্লাসে দেখা যেত ৮০ শতাংশ ছাত্র উধাও । না, পড়া না পারার ভয়ে নয়, এমনকি শাস্তি পাবার ভয়েও নয় – কারণ তাঁর পড়ানোর ধরণ হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র ভালো ছাত্রের কাছে ভালো লাগত, বাকীরা বিন্দুমাত্র আনন্দ পেত না । তাঁর পড়ানো শুরু হওয়া মাত্র বিরক্ত ছাত্রদের মধ্যে শুরু হ’ত চঞ্চলতা । সামান্য অসহিষ্ণুতাও সমীরণবাবু সহ্য করতে পারতেন না, কারোও মধ্যে অমনোযোগিতা দেখলেই দুগালে বসাতেন টেনে থাপ্পর । পার্থ বসত একদম শেষ বেঞ্চে ঠিক দরজার পাশে । স্যার পড়ানো শুরু করার পর স্যারের অলক্ষ্যে পার্থ প্রায়ই বেরিয়ে যেত ক্লাস থেকে । একদিন স্যারের নজরে পড়ে গেল । পার্থ বেরিয়েছে – স্যারও বেরিয়ে পার্থকে হাতেনাতে ধরার উদ্যোগ নিচ্ছেন । বুঝতে পেরে পার্থ দোতলার বারান্দা দিয়ে দৌড় লাগাল । নাছোড়বান্দা স্যারও শুরু করলেন ওর পেছন পেছন দৌড় । দোতলা থেকে একতলা – স্যারও সমানে দৌড়ে চলেছেন । স্যারকে নিরস্ত করার জন্য অফিসরুম থেকে অন্যান্য স্যারেরাও ছুটে এলেন । কোনরকমে তাঁকে শান্ত করা হ’ল । ততক্ষণে পার্থ কিন্তু পগার পার । ফর্সা টুকটুকে সমীরণবাবুর মুখ তখন রাগে লাল । হেডস্যারের কাছে নালিশ হ’ল । পরদিন হাতে পায়ে ধরে পার্থর শাস্তি লাঘব হ’ল । এরপর থেকে ক্লাসে বসে প্রায়ই আমরা শুনতে পেতাম দুপদাপ শব্দ । দেখা যেত অনেকেই সমীরণবাবুকে উত্তক্ত করার ক্ষেত্রে পার্থর অনুসারী হয়ে উঠেছে । সমীরণবাবু দৌড়চ্ছেন আর তাঁর সামনে দৌড়চ্ছে অন্য কোন ছাত্র । এ দৃশ্য হামেসাই চোখে পড়ত ।
তবে সমীরণবাবুর পড়াশোনার পরিধি ছিল তুলনাতীত । ইংরেজি সাহিত্যে তাঁর জ্ঞান ছিল অপরিসীম । হয়ত আমাদের মত সাধারণ মানের ছাত্রদের পক্ষে তা হজম করা কঠিন ছিল বলেই তাঁকে নিয়ে মজা করেছি । কিন্তু এখন বুঝতে পারি তিনি কি বিরাট মাপের মানুষ ছিলেন ।
ক্লাসে মাস্টারমশাইয়ের রক্তচক্ষু, বেত্রাঘাত, দু’আঙুলের মধ্যে পেন্সিল ঢুকিয়ে চাপ দেওয়া, দু’হাতে থান ইট চাপিয়ে নিল ডাউন বা বিভিন্ন ধরণের কষ্টকর শাস্তির ভয়ে ত্রস্ত হওয়ার প্রবণতা ছাত্রদের মধ্যে থাকেই । আবার এসব উপেক্ষা করে উল্টে মাস্টারমশাইদের বিড়ম্বনার কারণ হওয়া ডানপিটে ছাত্রের সংখ্যাও কম নয় । যেমন আমাদের ক্লাসের পার্থ আর অসীম বেত্রাঘাতে নিপুন কার্ত্তিক স্যারকে আড়াল থেকে বিকৃত স্বরে ‘ট্যারা কার্ত্তিক’ ব’লে পালিয়ে যেত প্রায়ই । স্যার ধরতেও পারতেন না । তবে আমাদের ইংরেজি স্যার সমীরণ বাবু ছিলেন ছিলেন সত্যিকারের কড়া, যদিও শেষ পর্যন্ত তাঁকেও পার্থদের কাছে হার মানতে হয়েছিল । একসময় আমাদের কাছে তো বটেই, অন্যান্য মাস্টারমশাইদের কাছেও তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক মজার চরিত্র ।
সমীরণ বাবু একসময় ছিলেন প্রেসিডেন্সির ইংরেজির কৃতি ছাত্র । ফর্সা, লম্বা চেহারা । মুখে সর্বদা পাইপ । কোট-টাই পড়া একদম সাহেবদের মত ফিটফাট চেহারা । একটা ইংরেজি কবিতা শেষ করতে তাঁর লেগে যেত মাসখানেক । স্বভাবতই সিলেবাস শেষ হ’ত না । কবির জীবনী শেষ করতে প্রায় মাস কাবার । পড়াতে পড়াতে প্রসঙ্গক্রমে নিজেই গান গাইতেন (তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ভালো গাইতে জানতেন), অভিনয় করতেন । এহেন সমীরণ স্যারের ক্লাসে দেখা যেত ৮০ শতাংশ ছাত্র উধাও । না, পড়া না পারার ভয়ে নয়, এমনকি শাস্তি পাবার ভয়েও নয় – কারণ তাঁর পড়ানোর ধরণ হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র ভালো ছাত্রের কাছে ভালো লাগত, বাকীরা বিন্দুমাত্র আনন্দ পেত না । তাঁর পড়ানো শুরু হওয়া মাত্র বিরক্ত ছাত্রদের মধ্যে শুরু হ’ত চঞ্চলতা । সামান্য অসহিষ্ণুতাও সমীরণবাবু সহ্য করতে পারতেন না, কারোও মধ্যে অমনোযোগিতা দেখলেই দুগালে বসাতেন টেনে থাপ্পর । পার্থ বসত একদম শেষ বেঞ্চে ঠিক দরজার পাশে । স্যার পড়ানো শুরু করার পর স্যারের অলক্ষ্যে পার্থ প্রায়ই বেরিয়ে যেত ক্লাস থেকে । একদিন স্যারের নজরে পড়ে গেল । পার্থ বেরিয়েছে – স্যারও বেরিয়ে পার্থকে হাতেনাতে ধরার উদ্যোগ নিচ্ছেন । বুঝতে পেরে পার্থ দোতলার বারান্দা দিয়ে দৌড় লাগাল । নাছোড়বান্দা স্যারও শুরু করলেন ওর পেছন পেছন দৌড় । দোতলা থেকে একতলা – স্যারও সমানে দৌড়ে চলেছেন । স্যারকে নিরস্ত করার জন্য অফিসরুম থেকে অন্যান্য স্যারেরাও ছুটে এলেন । কোনরকমে তাঁকে শান্ত করা হ’ল । ততক্ষণে পার্থ কিন্তু পগার পার । ফর্সা টুকটুকে সমীরণবাবুর মুখ তখন রাগে লাল । হেডস্যারের কাছে নালিশ হ’ল । পরদিন হাতে পায়ে ধরে পার্থর শাস্তি লাঘব হ’ল । এরপর থেকে ক্লাসে বসে প্রায়ই আমরা শুনতে পেতাম দুপদাপ শব্দ । দেখা যেত অনেকেই সমীরণবাবুকে উত্তক্ত করার ক্ষেত্রে পার্থর অনুসারী হয়ে উঠেছে । সমীরণবাবু দৌড়চ্ছেন আর তাঁর সামনে দৌড়চ্ছে অন্য কোন ছাত্র । এ দৃশ্য হামেসাই চোখে পড়ত ।
তবে সমীরণবাবুর পড়াশোনার পরিধি ছিল তুলনাতীত । ইংরেজি সাহিত্যে তাঁর জ্ঞান ছিল অপরিসীম । হয়ত আমাদের মত সাধারণ মানের ছাত্রদের পক্ষে তা হজম করা কঠিন ছিল বলেই তাঁকে নিয়ে মজা করেছি । কিন্তু এখন বুঝতে পারি তিনি কি বিরাট মাপের মানুষ ছিলেন ।
রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৭
বেঁচে থাকার দাম
বেঁচে থাকার দামঃ অ.না.ক.
১৭/০৭/২০১৭
ঠাণ্ডা ঘরে বিলিতি চায়
রেলের ধারে অবাধ চোলাই
সবার লক্ষ্য মাতা নেশায়।
গোরু ছাগল শুয়োর মোষ
ইচ্ছে মতন খেতে কি দোষ ?
পেটের সঙ্গে হয়না আপোষ।
অন্তরে কেউ রহিম বা রাম
আসল কিন্তু জীবন সংগ্রাম
সবচে বেশি বেঁচে থাকার দাম।
বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭
ভিক্ষাবৃত্তির কি অবসান হবে না ?
ভিক্ষাবৃত্তির কি অবসান হবে না ? অ.না.ক.
০৬/০৭/২০১৭
আমার
মত আর সকলেই নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন বাড়িতে বাড়িতে ভিখারির আনাগোনা প্রায় তলানিতে
এসে ঠেকেছে। আমি শহুরে অভিজ্ঞতার কথা বলছি। গ্রাম গঞ্জের অভিজ্ঞতা, আমার মনে হয়
কম-বেশি একই রকম। এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে ভিখারির সংখ্যা বিষ্ময়কর ভাবে হ্রাস
পেয়েছে। থালা হাতে বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে আর্ত কন্ঠে খাবার বা পয়সা চাওয়া ভিখারি
মেলা বিরল। পথে-ঘাটে, ট্রেনে-বাসে যদিও বা মেলে, তাদের বেশিরভাগই শারীরিক
প্রতিবন্ধকতার কারনে ভিক্ষা চান। কর্মক্ষম মানুষের বেঁচে থাকার ন্যুনতম চাহিদা
মেটানোর মত কাজের অভাব নেই, মানুষের মনে এই সচেতনতা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি অহেতুক
সহানুভূতিশীল হওয়ার প্রবণতাও অনেকাংশে কমে যাওয়ায় ভিখারির আকুল সাহায্য প্রার্থনা
বিফলে যায়। এভাবেই ভিক্ষাবৃত্তি ক্রমহ্রাসমান। না, ভিক্ষাবৃত্তি পুরোপুরি বন্ধ
হয়নি, সত্যিকারের অসহায় মানুষ এখনও আছেন, ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়া তাদের গত্যন্তর নেই।
অনেক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আছেন যাদের দেখলে সত্যিই মায়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যম
থেকে জানা যায় অনেকক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধকতা আসলে অভিনয়। আমি নিজেই আবিষ্কার করেছি
রাস্তায় স্বাভাবিকভাবে হেঁটে চলে বেড়ানো এক ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ অন্ধ সেজে ট্রেনের
কামরায় ভিক্ষা করতে। হ্যাঁ, মানতেই হবে ভিক্ষাবৃত্তি ন্যুনতম বিনিয়োগ, পরিশ্রম এবং
আয়করবিহীন উপার্জনের সহজ পন্থা। প্রয়োজন শুধু অভিনয়ের দক্ষতা। হাতে দগদগে ঘা নিয়ে চিকিৎসার
জন্য ভিক্ষা করতে আসা লোকটার অভিনয়টা যথাযথ হ’লে তবেই মিলবে সাহায্য। আসলে ঘা টা
যে মেক-আপ সেটা বুঝে গেলেই তো সব শেষ। তথ্য বলছে, এখন যে ভিখারিদের দেখা মেলে
তাদের অধিকাংশই ভন্ড। এই আয়করবিহীন উপার্জনের উপায় হিসাবে “ভিক্ষাবৃত্তি” রাষ্ট্রীয়
ভাবে আইন প্রণয়ন করে বন্ধ করে দেওয়া উচিত, অবিলম্বেই।
সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে ভিখারি মুক্ত সমাজ গঠনের জন্য সে দেশের সরকার বিভিন্ন
উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমাদের দেশে কি ভিক্ষাবৃত্তির মত সামাজিক অভিশাপ থেকে মুক্তি
পাবার কোন পদক্ষেপ নেওয়া হবে না ? উদ্যোগ আর মানসিকতার যৌথ প্রয়াসে আমাদের দেশও
ভিক্ষাবৃত্তির অভিশাপ থেকে মুক্ত হ’তে পারে। ভিখারি মুক্ত সমাজ গঠনের উদ্দেশ্যে কার্যকরী
পদক্ষেপ গ্রহণের সময় হয়েছে। প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রণয়নেরও প্রয়োজন আছে।
মূলত
এক শ্রেণির মানুষ আমাদের সমাজে ভিখারি বা ভিক্ষাবৃত্তিকে জিইয়ে রাখার কাজে ব্যস্ত।
এরা অন্যকে করুনা ক’রে আত্মতুষ্টি আর পুণ্যার্জন করেন। সুতরাং শয়ে শয়ে করুনা
প্রার্থীরা ভিখারির বেশে হাজির। মন্দির-মসজিদগুলিতে এই কারনেই ভিখারিদের
সংখ্যাধিক্য। এরা ধর্মের নামে ভিক্ষা করে - কেউ আল্লাহর বান্দা, কেউ ভগবানের দাস। হিন্দুধর্মে ভিক্ষাবৃত্তি
নিষিদ্ধ না-হলেও ইসলাম ধর্মে কিন্তু নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ কী নিষিদ্ধ না সেটা বড়ো কথা
নয় ভিখারি কিন্তু রয়েই গেছে – ভিক্ষাবৃত্তির অবসান কিন্তু হয়নি। স্মার্ট ফোন
ব্যবহার করলেও ভিক্ষাবৃত্তিকেই তারা লাভজনক বিনা-পরিশ্রমের পেশা হিসাবে বেছে
নিয়েছে। এমনকি ভিক্ষাবৃত্তিতেও চলে দাদাগিরি। ছোটো ছোটো শিশু,অস্থিচর্মসার বৃদ্ধ-বৃদ্ধা,রুগ্ন মহিলা এবং শারীরিক
অক্ষম মানুষগুলোর ভিক্ষের জন্য করুণ আর্তিতে বেদনাহত হয়ে বা অনেক সময় পূণ্যলাভের
আশায় আমরা কিছু সাহায্য করি। কিন্তু আমরা যেটা অনেকেই জানি না যে ওই ভিক্ষার অর্থ
যা আমরা ভিখিরিটির হাতে তুলে দিলাম তাতে হয়তো তার কোনোই অধিকার নেই। প্রসঙ্গত বলা
প্রয়োজন, ভিক্ষাবৃত্তি আর সাহায্য প্রার্থনা আক্ষরিক অর্থে দুটি ভিন্ন। যদিও
সাহায্য প্রার্থনার নাম ক’রে রাস্তা ঘাটে যা চলে তা ভিক্ষাবৃত্তিরই নামান্তর।
পাড়ার একটি বাচ্চার ক্যানসারের চিকিৎসার খরচের জন্য বাচ্চাটির একটি ছবি দেখিয়ে
দীর্ঘদিন ধ’রে চলে এই সাহায্য প্রার্থনা। আবার মৃত বাবার শ্রাদ্ধের খরচ জোগাতে
একটি ছেলেকে আশৌচের পোষাক প’ড়ে বিভিন্ন জায়গায় সাহায্য প্রার্থনা করতে দেখেছি
মাসের পর মাস। মিথ্যের আশ্রয় নেওয়া এই সমস্ত মানুষের জন্য প্রকৃত সাহায্য
প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়।
মানুষের
মধ্যে আত্নসন্মান আর আত্নমর্যাদা বোধের উন্মেষ না ঘটলে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ হওয়া
কঠিন। নিজের সাধ্যের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখার মানসিক শক্তি তৈরি হ’লে তবেই
অন্যের মুখাপেক্ষিতা দূর হয়। এই সচেতনতা মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করার সামাজিক উদ্যোগ
নিলে তবেই একদিন নির্মূল হবে ভিক্ষাবৃত্তি।
নিঃসন্দেহে
দারিদ্র ভিক্ষাবৃত্তির অন্যতম কারণ। দরিদ্রতার কষাঘাতে পিষ্ট হয়ে বেঁচে থাকার
তাগিদে অনেকেই ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়। কিন্তু সত্যি বলতে কি বর্তমানে বিভিন্ন
সরকারী, বে-সরকারী প্রকল্প আছে যেগুলির সদ্ব্যবহার করার মানসিকতা থাকলে বাস্তবিক
কাউকেই বোধ হয় ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করতে হয় না। তবে অস্বীকার করার উপায় নেই, স্বভাব
আমাদের সমাজের আরোও মারাত্মক ব্যাধি ।
শনিবার, ২৪ জুন, ২০১৭
শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০১৭
অতিথি
অতিথি: অ.না.ক. ২৪/০৬/'১৭
যখন আসার কথা ছিল তখন এলে না
কেন তুমি ভাঙছ রীতিনীতি?
এখন থেকে স্বজন নয়,
বলব তোমায় আমার অতিথি।
যখন আসার কথা ছিল তখন এলে না
কেন তুমি ভাঙছ রীতিনীতি?
এখন থেকে স্বজন নয়,
বলব তোমায় আমার অতিথি।
সোমবার, ১২ জুন, ২০১৭
কোনটা তোমার প্রিয়?
কোনটা তোমার প্রিয়? অ.না.ক. ১২/০৬/'১৭
চোখ ঝলসানো প্রখর রোদের তাপ
নাকি স্নিগ্ধ সজল বৃষ্টিধারা,
নাকি রোদের সাথে মেঘের লুকোচুরি?
কোনটা তোমার প্রিয়?
এখন যদি নাও পার
একসঙ্গে চলার পথের প্রান্তে এসে
উত্তরটা দিও।
চোখ ঝলসানো প্রখর রোদের তাপ
নাকি স্নিগ্ধ সজল বৃষ্টিধারা,
নাকি রোদের সাথে মেঘের লুকোচুরি?
কোনটা তোমার প্রিয়?
এখন যদি নাও পার
একসঙ্গে চলার পথের প্রান্তে এসে
উত্তরটা দিও।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)
মুখ চাপা সত্য
মুখ চাপা সত্য শেষ দিয়ে সত্যের শুরু নাকি সত্যের চির সমাধি? নাকি মুখ চাপা সত্যের গোঙানি স্পষ্ট বাক্যে শোনা যাবে একদিন?
-
এক লাইনের কাব্যঃ অ.না.ক. ২১/০৩/২০১৭ এক লাইনেও কাব্য হয় দু'লাইনে ছন্দময় ।