বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৩

'কারার ওই লৌহ কপাট' গানটির সুর বিকৃতি

                                                  'কারার ওই লৌহ কপাট' গানটির সুর বিকৃতি

                                                                                                            অমরনাথ কর্মকার ১৬/১১/২০২৩


অস্কার জয়ী সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমানের মত একজন মহান শিল্পী কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটিতে নতুন ক’রে সুরারোপ করেছেন যা সংস্কৃতি প্রিয় বাঙালীর কাছে মোটেই কাম্য নয়। গানটি একদা ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। জনমানসে গানটির প্রলয়ঙ্করী প্রভাব দেখে শঙ্কিত ইংরেজ সরকার নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হন গানটিকে। ১৯৪৯ সালে ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’ সিনেমাতে প্রথম ব্যবহার করা হয় গানটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনেও গানটি অপরিসীম অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবিও বটে। সুতরাং তাঁর এই ঐতিহাসিক গানের বিকৃতি ঘটালে বাঙালী তথা বাংলাভাষীরা অখুশি হবেন তা বলাই বাহুল্য। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘বাঙ্গলার কথা পত্রিকায় এই গানটি (আসলে কবিতা) ‘ভাঙার গান’ শিরোনামে প্রকাশিত হয় ১৯২২-এর ২০ জানুয়ারী। চিত্তরঞ্জন তখন হুগলির জেলে জেলবন্দি। নজরুলের এই গানের মধ্যে দিয়ে বাঙালীর রক্তের মধ্যে ছলকে ওঠে বিদ্রোহ – এ সুরের বিকৃতি বাঙালী মেনে নিতে পারে না, বাঙালী বিদ্রোহী হ’তে বাধ্য।

রবীন্দ্রনাথ ভিন্ন ভাষার, ভিন্ন দেশের অনেক গান, সুর  বা কবিতায় অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর রচনায় তা মৌলিকভাবে ব্যবহার করেছেন। সে তো মহান সৃষ্টি। রহমান সাহেব এই গানে অনুপ্রাণিত হয়ে ভিন্ন গান ও সুর ব্যবহার করতে পারতেন। ইতিপূর্বে রবি ঠাকুরের ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য’ কবিতায় সুরারোপ ক’রে যথেষ্ট কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে কেন যে তাঁর মত বিদগ্ধ শিল্পী নজরুলের গানের সুর বিকৃত করলেন তা বিষ্ময়কর। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিতে নির্মিত রাজাকৃষ্ণ মেনন পরিচালিত ‘পিপ্পা সিনেমাটিতে এই গানের যে সুর বিকৃতি করা হয়েছে তাতে বিদ্রোহের প্রকাশ নেই, পরিবর্তে আছে কিছুটা লোকসঙ্গীতের ছোঁয়া আর প্রচলিত রোম্যান্টিক গানের আদল। গানটির কথা, তার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ইত্যাদি খতিয়ে দেখলে হয়ত রহমান সাহেব এমন কান্ড করতেন না।

প্রতিটি বাঙালীর উচিৎ রহমান সাহেবের এই গানটির প্রকাশ বন্ধ রাখার জন্য প্রতিবাদে সামিল হওয়া।      

শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কবিতায় করোলা

 

   করোলা

        অমরনাথ কর্মকার ১০/০৯/২০২৩

 

পালঙের চেয়ে অনেক বেশি 

ক্যালসিয়াম আছে করোলায়

কলার প্রায় দ্বিগুন পটাসিয়াম

অনায়াসে পেয়ে যাবে ভাই।

ভিটামিন এ, ভিটামিন সি

আর লোহাও নেই কম

যথেষ্ট ফাইবারে ভরা

করোলা বহু রোগের যম।

রক্তের চিনি কমাতে পটু

অমূল্য এই ভেষজ তাই

নিজগুনে বাজারে বিকোয়

প্রবল জনপ্রিয়তায়।

মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

অতীত আমাদের বড় শিক্ষক

 অতীত আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক

অমরনাথ কর্মকার ০৫/০৮/২০২৩

শিক্ষকের সংজ্ঞা পাল্টেছে আজ। আমাদের ছোটবেলায় শিক্ষককে দেখতাম ছাত্রের জীবন গড়ার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করতেন। টালি বা টিনের ছাদ দেওয়া ঘরে কোনরকমে সংসার চালানো জীবন গড়ে তিনি তাঁর ছাত্রদের জীবন গড়ার কারিগর হিসাবে কাজ করতেন। কিন্তু জীবন আর জীবিকা এই দুইএর মেলবন্ধন না হ'লে আজকের দিনে জীবন অথর্ব। শুধু জীবনের মূল্য কেউ দেয় না। কোন শিল্পী, কবি তাঁদের প্রত্যেকের মহান জীবনের মূল্য তখনই তাঁরা পান যখন তাঁদের এই জীবন থেকে জীবিকা আসে। তাই আজকাল শিক্ষককে শুধু জীবন নয়, জীবিকা গড়ারও কারিগর হতে হয়, নইলে শিক্ষক হিসাবে তাঁর সার্থকতা নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও চলে জীবনের সাথে জীবিকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই 'জীবন' গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। এখন  শিক্ষা মানে এমন কিছু যা শুধুমাত্র জ্ঞানার্জন নয়, যা জীবিকার কাজেও সমান উপযোগি। শিক্ষায় এখন যেহেতু জীবন ক্রমশ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে তাই জীবিকার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গিয়ে জীবনের মূল্য কমছে, হারাচ্ছে মানবিকতা, বাড়ছে হানাহানি, লোপ পাচ্ছে মানুষের সহমর্মিতা, সমাজ ছেয়ে যাচ্ছে দুর্নীতিতে। শিক্ষক দিবস প্রতি বছর আসে। ঘটা ক'রে তা পালনও করা হয়।   কিন্তু সমাজে ডিগ্রিধারী, উচ্চশিক্ষিতের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হলেও সমাজ ক্রমশ অশিক্ষিত মানুষের দখলে চ'লে যাচ্ছে, সমাজ হচ্ছে কলুষিত। তাই অতীত এখন আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক।

মুখ চাপা সত্য

 মুখ চাপা সত্য শেষ দিয়ে সত্যের শুরু  নাকি সত্যের চির সমাধি?  নাকি মুখ চাপা সত্যের গোঙানি স্পষ্ট বাক্যে শোনা যাবে একদিন?