বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

আত্মসমালোচনা

 আত্মসমালোচনা: অমরনাথ কর্মকার ১৫/০২/২০২৪


আত্মসমালোচনা, নিজের সঙ্গে কথা বলা এগুলো প্রতিটি মানুষের মানসিক স্বাস্থের সুস্থতার জন্য খুব জরুরী। কিন্তু আমাদের সামাজিক পরিবেশ ক্রমশ এমন হয়ে উঠছে যে, যে যার মত চলছে, যা খুশি তাই বলছে অর্থাৎ স্বেচ্ছাচার অধিকাংশ মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠছে। তাদের মধ্যে আত্মসমালোচনা নেই ব'লে স্বেচ্ছাচার লাগামহীন হয়ে পড়ছে ক্রমশ। রাজনীতিকদের মধ্যে এই প্রবণতা যে কি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে, প্রতিদিন খবর দেখলে তা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।  আর সত্যিই তো, নিজের সঙ্গে কি বিষয়ে কথা বলব?   সমাজে মানুষ ক্রমশ নিজস্বতা হারাচ্ছে। মানুষ নিজেই নিজের মধ্যে থাকে না। একটা স্বাধীন দেশের অধিবাসী হয়েও প্রায় প্রত্যেকেই কেমন যেন পরাধীনতার কটু স্বাদ অনুভব করেন। খুব সত্যি বলতে, রাজনীতি সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠছে, গণতন্ত্রের তন্ত্র বড্ড আলগা।  মানুষের স্বেচ্ছাচারিতা, ক্রোধ, প্রতিহিংসাপরায়ণতা, দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আত্মসমালোচনা করাটাও বডড শঙ্কার। এক্ষেত্রে Brain Spellman-এর উদ্ধৃতিটি খুবই প্রাসঙ্গিক  "Talking to myself is okay. But answering back is risky." তাই বোধহয় আমরা আত্মসমালোচনা করতে ভয় পাই।

রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩

বিষন্ন বিদায় ২০২৩


 

আজ ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ বছরের অন্তিম সূর্যাস্ত দেখছিলাম বকখালির সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে। বছরটা আজই হারিয়ে গেল। হারানোর যন্ত্রনাটা যেমন থাকে তেমনি আসন্ন নতুনকে দেখার আনন্দ মিশ্রিত প্রত্যাশাও থাকে। বর্তমানের অতীত হওয়া অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু অতীত যদি ব্রাত্য হয় তা বেদনার। অতীত নতুনের কারিগর। তাই অতীত শ্রদ্ধেয়। সেই কারনে প্রয়াত মহান মানুষদের স্মরণ করার সময় তাঁদের ছবি রাখি, প্রতিকৃতি স্থাপন করি। হারিয়ে যাওয়া অতীত যখন হাজির হয় বর্তমানে, তখন সে আনন্দের সীমাপরিসীমা থাকে না। বর্তমান বছরের শেষ সূর্যাস্ত যখন সাগরের দিগন্তে শোভা বিস্তার করছে তখন সমুদ্র সৈকতে এক বৃদ্ধকে দেখলাম বায়োস্কোপ নিয়ে খরিদ্দারের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষমান। কৌতুহলে কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,”এখন বায়োস্কোপ দেখতে কেউ আসে?” বৃদ্ধ সহাস্যে উত্তর দিলেন,” হ্যাঁ অনেকেই আসে।শুনে যারপরনাই পুলকিত হলাম। আধুনিক প্রজন্মের কেউ এই বায়োস্কোপ সিনেমায় ছাড়া বাস্তবে দেখেছে লে মনে হয় না। জানিনা, গ্রামের বাচ্চারা দেখতে আসে কি না। এর পর বেশ কিছুক্ষণ সমুদ্রসৈকতে কাটিয়ে যখন ফিরছি তখনও দেখলাম বৃদ্ধ বায়োস্কোপ নিয়ে বসে আছেন একা, বায়োস্কোপে চোখ রাখার মত কোন খরিদ্দার চোখে পড়ল না। ২০২৩-এর বিদায় বড্ড বিষন্ন লাগল।

 

নতুন বছরের (২০২৪) শুভেচ্ছা


 

বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৩

'কারার ওই লৌহ কপাট' গানটির সুর বিকৃতি

                                                  'কারার ওই লৌহ কপাট' গানটির সুর বিকৃতি

                                                                                                            অমরনাথ কর্মকার ১৬/১১/২০২৩


অস্কার জয়ী সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমানের মত একজন মহান শিল্পী কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটিতে নতুন ক’রে সুরারোপ করেছেন যা সংস্কৃতি প্রিয় বাঙালীর কাছে মোটেই কাম্য নয়। গানটি একদা ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। জনমানসে গানটির প্রলয়ঙ্করী প্রভাব দেখে শঙ্কিত ইংরেজ সরকার নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হন গানটিকে। ১৯৪৯ সালে ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’ সিনেমাতে প্রথম ব্যবহার করা হয় গানটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনেও গানটি অপরিসীম অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবিও বটে। সুতরাং তাঁর এই ঐতিহাসিক গানের বিকৃতি ঘটালে বাঙালী তথা বাংলাভাষীরা অখুশি হবেন তা বলাই বাহুল্য। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘বাঙ্গলার কথা পত্রিকায় এই গানটি (আসলে কবিতা) ‘ভাঙার গান’ শিরোনামে প্রকাশিত হয় ১৯২২-এর ২০ জানুয়ারী। চিত্তরঞ্জন তখন হুগলির জেলে জেলবন্দি। নজরুলের এই গানের মধ্যে দিয়ে বাঙালীর রক্তের মধ্যে ছলকে ওঠে বিদ্রোহ – এ সুরের বিকৃতি বাঙালী মেনে নিতে পারে না, বাঙালী বিদ্রোহী হ’তে বাধ্য।

রবীন্দ্রনাথ ভিন্ন ভাষার, ভিন্ন দেশের অনেক গান, সুর  বা কবিতায় অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর রচনায় তা মৌলিকভাবে ব্যবহার করেছেন। সে তো মহান সৃষ্টি। রহমান সাহেব এই গানে অনুপ্রাণিত হয়ে ভিন্ন গান ও সুর ব্যবহার করতে পারতেন। ইতিপূর্বে রবি ঠাকুরের ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য’ কবিতায় সুরারোপ ক’রে যথেষ্ট কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে কেন যে তাঁর মত বিদগ্ধ শিল্পী নজরুলের গানের সুর বিকৃত করলেন তা বিষ্ময়কর। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিতে নির্মিত রাজাকৃষ্ণ মেনন পরিচালিত ‘পিপ্পা সিনেমাটিতে এই গানের যে সুর বিকৃতি করা হয়েছে তাতে বিদ্রোহের প্রকাশ নেই, পরিবর্তে আছে কিছুটা লোকসঙ্গীতের ছোঁয়া আর প্রচলিত রোম্যান্টিক গানের আদল। গানটির কথা, তার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ইত্যাদি খতিয়ে দেখলে হয়ত রহমান সাহেব এমন কান্ড করতেন না।

প্রতিটি বাঙালীর উচিৎ রহমান সাহেবের এই গানটির প্রকাশ বন্ধ রাখার জন্য প্রতিবাদে সামিল হওয়া।      

শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কবিতায় করোলা

 

   করোলা

        অমরনাথ কর্মকার ১০/০৯/২০২৩

 

পালঙের চেয়ে অনেক বেশি 

ক্যালসিয়াম আছে করোলায়

কলার প্রায় দ্বিগুন পটাসিয়াম

অনায়াসে পেয়ে যাবে ভাই।

ভিটামিন এ, ভিটামিন সি

আর লোহাও নেই কম

যথেষ্ট ফাইবারে ভরা

করোলা বহু রোগের যম।

রক্তের চিনি কমাতে পটু

অমূল্য এই ভেষজ তাই

নিজগুনে বাজারে বিকোয়

প্রবল জনপ্রিয়তায়।

মুখ চাপা সত্য

 মুখ চাপা সত্য শেষ দিয়ে সত্যের শুরু  নাকি সত্যের চির সমাধি?  নাকি মুখ চাপা সত্যের গোঙানি স্পষ্ট বাক্যে শোনা যাবে একদিন?