বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
অতীত আমাদের বড় শিক্ষক
অতীত আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক
অমরনাথ কর্মকার ০৫/০৮/২০২৩
শিক্ষকের সংজ্ঞা পাল্টেছে আজ। আমাদের ছোটবেলায় শিক্ষককে দেখতাম ছাত্রের জীবন গড়ার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করতেন। টালি বা টিনের ছাদ দেওয়া ঘরে কোনরকমে সংসার চালানো জীবন গড়ে তিনি তাঁর ছাত্রদের জীবন গড়ার কারিগর হিসাবে কাজ করতেন। কিন্তু জীবন আর জীবিকা এই দুইএর মেলবন্ধন না হ'লে আজকের দিনে জীবন অথর্ব। শুধু জীবনের মূল্য কেউ দেয় না। কোন শিল্পী, কবি তাঁদের প্রত্যেকের মহান জীবনের মূল্য তখনই তাঁরা পান যখন তাঁদের এই জীবন থেকে জীবিকা আসে। তাই আজকাল শিক্ষককে শুধু জীবন নয়, জীবিকা গড়ারও কারিগর হতে হয়, নইলে শিক্ষক হিসাবে তাঁর সার্থকতা নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও চলে জীবনের সাথে জীবিকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই 'জীবন' গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। এখন শিক্ষা মানে এমন কিছু যা শুধুমাত্র জ্ঞানার্জন নয়, যা জীবিকার কাজেও সমান উপযোগি। শিক্ষায় এখন যেহেতু জীবন ক্রমশ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে তাই জীবিকার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গিয়ে জীবনের মূল্য কমছে, হারাচ্ছে মানবিকতা, বাড়ছে হানাহানি, লোপ পাচ্ছে মানুষের সহমর্মিতা, সমাজ ছেয়ে যাচ্ছে দুর্নীতিতে। শিক্ষক দিবস প্রতি বছর আসে। ঘটা ক'রে তা পালনও করা হয়। কিন্তু সমাজে ডিগ্রিধারী, উচ্চশিক্ষিতের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হলেও সমাজ ক্রমশ অশিক্ষিত মানুষের দখলে চ'লে যাচ্ছে, সমাজ হচ্ছে কলুষিত। তাই অতীত এখন আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক।
বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩
বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩
শুক্রবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৩
পাপ-পুণ্য ও পরিণতি
পাপ-পুণ্য ও পরিণতি
অমরনাথ কর্মকার ১৯/০৮/২০২৩
ন্যায়,অন্যায়,পাপ,পুণ্য এসবের পরিণাম নিয়ে কেউ যখন মাথা ঘামায় তখন ভেতরে ভেতরে খুব বিরক্তি অনুভব করি। কোন অন্যায়কারীর জীবনে যখন খুব প্রতিকূলতা নেমে আসে এবং নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়ে মারা যান, তখন এটাকে অনেকে তার কৃত কর্মের কঠোর পরিণাম হিসাবে ধ'রে নেন। একইভাবে, যখন কোন সৎ ব্যক্তি সুন্দর সমস্যাহীন জীবনের শেষে মারা যান তখন এটাকেও তার জীবনের সততার পরিণাম হিসাবে গন্য করেন অনেকে। আমার বিশ্বাস, এগুলো নেহাতই কাকতালীয় জৈবনিক প্রক্রিয়া। আমি এমন অনেককে দেখেছি যারা সারা জীবন জঘন্য অন্যায়, অপরাধ প্রবৃত্তির মধ্যে কাটিয়েও শেষ জীবনটা সুন্দরভাবে কাটিয়ে প্রায় নিরোগ অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করলেন। আমি যখন এই কথাগুলো লিখছি তখন আমার থেকে ঠিক চার হাত দূরে শুয়ে আছে সদ্যপ্রয়াত এক নিথর মহিলার দেহ। গত প্রায় ছ'বছর শরীরের নানান সমস্যায় জর্জরিত। বিশেষ ক'রে হার্টের কঠিন সমস্যা দেখা দিয়েছিল অনেক আগেই। মাস ছয় আগে শুরু হ'ল স্মৃতিভ্রম (ডিমেনশিয়া)। সে এক গুরুতর পরিস্থিতি। তারপর দেখা দিল পায়ের থ্রম্বোসিস। হাসপাতাল আর বাড়ি এই দুই স্থানের ঘনঘন আনাগোনায় সবাই ব্যতিব্যাস্ত। তার চেয়েও বড় কথা তাঁর শরীরের কষ্ট চোখে দেখা যেত না। গতকাল রাতে প্রচন্ড বুকে ব্যথা আর প্রবল শ্বাসকষ্টের কারনে ভর্তি করা হ'ল নার্সিং হোমে। দেখা গেল রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৪.৫ (যেখানে স্বাভাবিক মাত্রা দশের ওপরে)। মাঝরাতে কোনক্রমে রক্ত জোগাড় হ'ল। কিন্তু সকালে আচমকাই অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোজা ভেন্টিলেশনে। তারপর আজ রাতে জীবনের অন্তিম পরিণতি। স্বাধীনতার বছরে জন্ম নেওয়া প্রচন্ড দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করা প্রত্যন্ত গ্রামের এক মহিলা সেই আমলে প্রতিবেশি শুভানুধ্যায়ীর আর্থিক সহায়তায় কলকাতায় গিয়ে ভূগোল নিয়ে পড়াশুনা ক'রে গ্রামেরই এক উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে প্রথমে ভূগোলের শিক্ষিকা এবং পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করলেন - টানা ৪০ বছরের শিক্ষকতায় সততার জন্য যিনি সর্বত্র জনপ্রিয় ছিলেন, যার চারিত্রিক গুনাবলির প্রশংসা করতে কাউকে দ্বিধাগ্রস্থ হ'তে হত না, তাঁর জীবনের অন্তিম পরিণতি যে এতটা দুর্বিসহ হবে, একথা ভাবতেও অবাক লাগে। আমার থেকে মাত্র চার হাত দূরের সেই শব একটু বাদেই পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। পাপ-পুণ্য, ন্যায়-অন্যায় আর জৈবনিক প্রক্রিয়া দুটি ভিন্ন জিনিস। তবে হ্যাঁ, সৎ জীবন যাপন করলে জীবন কাটে সুন্দরভাবে, আর অন্যায় ভাবে জীবন কাটালে জীবনের পরিণাম হয় দুর্বিসহ এই কথাকে যারা বিশ্বাস করেন, তাদেরকে এই সরল বিশ্বাস মেনে চলার জন্য ধন্যবাদ। আমি চাই এই বিশ্বাস সবার মধ্যে গড়ে উঠুক। তাতে বর্তমান সমাজের অনেকটাই উন্নতি হবে, সমাজ যেভাবে অন্যায়, অত্যাচার আর অরাজকতায় কলুষিত তাতে এই বিশ্বাস অনেকটাই কার্যকরী। বিজ্ঞানীদের অনেক ভুল তত্ত্বও কিন্তু জন্ম দিয়েছে অনেক নতুন নতুন তত্ত্বের।
মুখ চাপা সত্য
মুখ চাপা সত্য শেষ দিয়ে সত্যের শুরু নাকি সত্যের চির সমাধি? নাকি মুখ চাপা সত্যের গোঙানি স্পষ্ট বাক্যে শোনা যাবে একদিন?
-
এক লাইনের কাব্যঃ অ.না.ক. ২১/০৩/২০১৭ এক লাইনেও কাব্য হয় দু'লাইনে ছন্দময় ।