মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০২২

ভিপিএন নিয়ন্ত্রণ

 

নেট নিয়ন্ত্রণ

                                                                                        -অমরনাথ কর্মকার

 সম্প্রতি ভিপিএন- নজরদারি বিষয়ক কেন্দ্রীয় সরকারের একটি নির্দেশিকাকে ঘিরে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষের হয়ত নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা নেই কিন্তু এই নির্দেশিকা নিয়ে কর্পোরেট সংস্থা ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতন মানুষের মধ্যে আলোচনার ঝড় উঠতে শুরু করেছে।

অধিকাংশ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কাছে এই ভিপিএন সম্বন্ধে সম্যক ধারণা না থাকাটাই স্বাভাবিক। সাধারণের বোধগম্যতার জন্য প্রথমেই জানা দরকার ভিপিএন বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক আসলে কি কম্পিউটার এবং বিশেষত স্মার্টফোনের দৌলতে এখন আবালবৃদ্ধবনিতা ইন্টারনেট ব্যবহার রে থাকেন। গুগল, ইমেল, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, ট্যুইটারের ব্যবহারের পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং, অনলাইন শপিং, অনলাইন পেমেন্ট এসব কাজে আজ অনেকেই সাবলীল। কিন্তু আমরা অধিকাংশ মানুষই ভেবে দেখি না যে এইসব করতে গিয়ে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হচ্ছে কি না। মাঝে মাঝেই খবরে শোনা যায় কারোও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা উধাও। তখন আমরা সাময়িক দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হলেও তলিয়ে দেখার চেষ্টা করি না, এসবের পেছনের কারন। হ্যাঁ, ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের ব্যক্তিগত বা রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হয় যার পেছনে থাকে অসাধু হ্যাকার যারা তথ্যাবলী চুরি রে আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে বা রাষ্ট্রীয়ে ক্ষেত্রে বিরাট বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।  অথচ আধুনিক দুনিয়ায় ইন্টারনেট ছাড়া এক মুহূর্তও চলে না।

তাহলে ইন্টারনেট ব্যবহারের এই বিপদ থেকে রক্ষা পাবার উপায় ? হ্যাঁ, ভিপিএন এক্ষেত্রে রক্ষাকবচের মত কাজ করে। কিভাবে ? যখন কেউ স্মার্টফোন বা কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট সংযোগ করেন তখন এই ভিপিএন একটা গোপন এবং অদৃশ্য আস্তরণ হিসাবে ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হয়। এই অদৃশ্য আস্তরণ অনলাইনে থাকাকালে আপনাকে হ্যাকারদের কাছ থেকে আড়াল রে রাখে যার ফলে আপনার অবস্থান, আপনার আইপি অ্যাড্রেস বা আপনার ব্যবহৃত তথ্য  (যেমন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, আধার, প্যান কার্ড বা অন্যান্য) ফাঁস হয়ে যাবার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়। আপনার তথ্যের মূল্যকে পুঁজি রে যারা নাশকতামূলক কাজ করার জন্য ফাঁদ পেতে আছে তাদের হাত থেকে বাঁচাতে এই ভিপিএন সতর্ক প্রহরীর মত কাজ করে বলেই ভিপিএন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেয়াল রে দেখবেন, আপনি হয়ত বিশেষ কোন পণ্য ইন্টারনেটে খোঁজ করছেন, পরে দেখবেন সেই জাতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপনগুলো ক্রমান্বয়ে আপনার সামনে হাজির হচ্ছে। এর অর্থ আপনার চাহিদার ওপর সর্বদা নজর রাখা হচ্ছে।

মোটকথা ভিপিএন-এর কাজ আপনার ইন্টারনেট সংযোগকে এনক্রিপ্ট (অন্য কোন কোডে রুপান্তর) করা এবং আপনার অবস্থান, আইপি অ্যাড্রেস লুকিয়ে রাখা। যার ফলে আপনার তথ্যাবলী চুরি করা কার্যত কঠিন হয়ে পড়ে। এই কারনেই ভিপিএনকে বলা হয়ে থাকে প্রাইভেসি হিরো।

এই ভিপিএন ব্যবহার বিষয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন আইনি নিয়ন্ত্রণ আছে। পৃথিবীর দশটি দেশে (চীন, রাশিয়া,বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, তুর্কমেনিস্তান, উগান্ডা, ইরাক, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব-আমিরশাহী এবং ওমান) ভিপিএন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অর্থাৎ সেইসব দেশে শুধুমাত্র সরকার নিয়ন্ত্রিত ভিপিএন ব্যবহৃত হয় ফলত, এই দেশগুলিতে সরকার প্রতিটি নাগরিকের ওপর নজর রাখতে সক্ষম। চীন বিশ্ব অর্থনীতির দ্বার উন্মুক্ত করেছে বটে কিন্তু সমাজতান্ত্রিকতার মাধ্যমে সে দেশের সরকার তার নাগরিকদের ওপর বিধিনিষেধের খাঁড়া ঝুলিয়ে রেখেছে। প্রায় একই উদ্দেশ্যে বাকী টি দেশেও ভিপিএন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আবার কিছু কিছু দেশে ভিপিএন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ না হলেও  সরকারী নিয়ান্ত্রণাধীন

এতদিন পর্যন্ত ভারতে ভিপিএন-এর ওপর সরকারী নিয়ন্ত্রণ ছিল না গত মে, ২০২২ কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক ভিপিএন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির কাছে যে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে তাতে বলা হয়েছে ভিপিএন-এর তথ্যাবলি অর্থাৎ নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারী গ্রাহকদের যোগাযোগের সমস্ত তথ্য অন্তত পাঁচ বছর সংরক্ষিত রাখতে হবে এবং চাহিদা মত তা কেন্দ্রীয় সরকারকে সরবরাহ করতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই নির্দেশিকা জারির ফলে ভারতের নাগরিকদের গোপনীয়তা এবং অধিকার লঙ্ঘিত হবে না ? হ্যাঁ, ইচ্ছে করলেই সরকার ভিপিএন- গচ্ছিত তথ্য থেকে ব্যক্তি বা সংস্থার তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম। সেটা যদি সৎ উদ্দেশ্যে হয় তবে বলার কিছু নেই। কিন্তু সেটা যে সৎ উদ্দেশ্যেই হবে তার গ্যারান্টি কে দেবে ? আর আইনগত দিক থেকে এই নির্দেশিকার যৌক্তিকতা কতটা সেটাও দেখার বিষয়। আর পরিশেষে বলতেই হয়, আমাদের দেশে সর্বত্র রাজনীতির গন্ধ

রবিবার, ১ মে, ২০২২

অঙ্কুরিত মৃত্যুর লাশ

 অঙ্কুরিত মৃত্যুর লাশ

            - অমরনাথ কর্মকার ০১/০৫/২০২২


জন্ম আগে, মৃত্যু তো তার অনেক পরে

জন্ম জীবনে তাই অধিক মূল্য ধরে।

লাভ কি ফেলে মৃত্যুর ভয়ে দীর্ঘশ্বাস? 

বরং ছাঁট অঙ্কুরিত মৃত্যুর লাশ।

মুখ চাপা সত্য

 মুখ চাপা সত্য শেষ দিয়ে সত্যের শুরু  নাকি সত্যের চির সমাধি?  নাকি মুখ চাপা সত্যের গোঙানি স্পষ্ট বাক্যে শোনা যাবে একদিন?