বিশ্বকাপ ফুটবল চলছে।
ভারত কবে বিশ্বকাপ ফুটবলে কোয়ালিফাই করবে কিংবা আদৌ কোনদিন করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে নানা বিতর্ক রয়ে গেছে। তবে একদা এই ভারতবর্ষে যে কিছু বিশ্বমানের ফুটবলার জন্মেছিলেন সে বিষয়ে সন্ধেহের কোনো অবকাশ নেই. তাঁদের অনেকের ...নাম বহুশ্রুত , আবার কেউ কেউ ডুবে গেছেন প্রায় বিস্মৃতির অন্তরালে। এমনই একজন প্রতিভাবান ফুটবলার ছিলেন সৈযদ আব্দুস সামাদ। ১৮৯৫ সালে বিহারের পুর্নিয়ায় জন্ম। পূর্ণিয়া জুনিয়র ফুটবল ক্লাবের হয়ে খেলার সময়ই তাঁর ড্রিবলিং আর ট্যাক্লিং কলকাতার ফুটবল কর্তাদের নজর কারে। ১৯১২ সালে তিনি কলকাতা মেইন টাউন ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হন. তখন কিংবদন্তি পেলে-র জন্ম হয়নি। আর মারাদোনা, মেসি যাদের নিয়ে ফুটবল বিশ্বে এত উন্মাদনা তখন তাদের অস্তিত্ব ছিলনা। কিন্তু আব্দুস সামাদ সেই সময়ে ভারতবর্ষের হয়ে সারা পৃথিবীতে ফুটবলে ঝড় তুলিছিলেন। ১৯১৬ সালে সামাদ ইংল্যান্ডের সমারসেট টিমের বিরুদ্ধে খেলায় অসামান্য কৃতিত্বের পরিচয় রেখেছিলেন। ১৯১৮ সালে সামাদ কলকাতার ওরিয়েন্ট ক্লাবের হয়ে খেলেন। ১৯২১-১৯৩০ তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে টিমের হয়ে খেলেন। ১৯২৭ সালে শের উড ফরেষ্ট্রী টিমের বিরুদ্ধে জয়সূচক গোল করে আরো বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। ১৯২৪ সালে তিনি ভারতের জাতীয় দলে নির্বাচিত হন এবং ১৯২৪ সালে ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব করেন। বার্মা, হং কং, জাভা, চীন, সিঙ্গাপুর, ব্রিটেন সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাঁর ফুটবল নৈপুণ্য তাঁকে বিশ্বখ্যাতি এনে দেয়। চিনের পিকিং -এ পরিবর্ত খেলোয়ার হিসাবে নেমে পর পর ৪ গোল দিয়ে ৪-৩ গোলে ভারতকে জিতিয়ে তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ১৯৩৩ সালে তিনি কলকাতার মোহামেডান ক্লাবে যোগদান করে পাঁচ বছর খেলেন। পরবর্তীকালে তিনি তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে স্থায়ীভাবে চলে যান রেলে চাকরি নিয়ে। তাঁর সম্মানে এবং স্মৃতিতে বাংলাদেশে প্রতিবছর ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়. ভারতবর্ষে সামাদের মত প্রতিভাবান খেলোয়ার জন্মেছেন, ট্রাডিশন ধরে রাখতে পারলে আমরাও হয়ত বিশ্বকাপ খেলতে পারতাম।