বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪

মন ভালো নেই ষষ্ঠীতে

 

মন ভালো নেই ষষ্ঠীতে – অ না ক ০৯/১০/২০২৪

উৎসব শুরু হ’ল। প্রতি বছর লিখি ষষ্ঠী থেকে শুরু ক’রে দশমী অবদি। পুজো এলেই আমার মন খারাপ হ’তে শুরু করে। কেন ? এ প্রশ্নের উত্তর আমারও অজানা থাকে। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলে প্রচুর মানুষ, অথচ এই জনারণ্যে নিজেকে নিঃসঙ্গ বোধ হয়। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে চোখ ধাঁধানো আলোর দিকে তাকাতে ইচ্ছে করে না, ঢাকের আওয়াজ কানে লাগে। অথচ উৎসব যত শেষের দিকে এগোয়, আমার মন খারাপের মাত্রাও কমতে থাকে ক্রমশ। সারা বছর ধরেই মন খারাপের অনেক কারন থাকে, কাজের ব্যস্ততায় সেই মন খারাপগুলো সুপ্ত থাকে, নিরালায় জেগে ওঠে, আবার কর্মব্যস্ততায় চাপা পড়ে যায় । পুজোর সময় উৎসবের কর্মব্যস্ততাহীন আবহে মন খারাপ করা ঘটনাগুলো একে একে ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে মনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বলেই কি দুর্গোপুজোয় আমার মন খারাপ হয় ? হয়ত তাইই, কিংবা নয়। আমি নিজেও জানি না। আজ ষষ্ঠী, আজ চরম মন খারাপ। একদিকে অভয়ার বিচারের দাবিতে আন্দোলনে আন্দোলিত রাজ্য। মাত্র কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া অভয়ার মর্মান্তিক নারকীয় হত্যাকান্ড অনুভূতিশীল প্রতিটি মানুষের মন খারাপ করার পক্ষে যথেষ্ট। এবারের পুজোয় মন খারাপের এটি একটি নির্দিষ্ট কারন। কিন্তু আমার মন খারাপ তো প্রতি বছরে ঘটনা। পুজো এলে আমার মন খারাপের উৎস সন্ধানে বার বার ব্যর্থ হয়েছি। ষষ্ঠী গেল, কোথাও যায়নি – শুধু গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতে একটু বাজারে যাওয়া, বাকী সময় স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী। সঙ্গী প্রাণহীন অথচ মুখর টিভি, কিংবা মোবাইল বা ল্যাপটপ। এখন উৎসব খুব প্রয়োজন। সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে আমরা যেভাবে ভার্চুয়্যাল সম্পর্কে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি, তাতে একই পাড়ায়, একই গ্রামে থেকেও নিজেদের আত্মিক সম্পর্ক থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছি। দুর্গোৎসব বেশি বেশি ক’রে হোক। দুর্গোৎসবে মানুষ মেতে উঠুক।  হোয়াটস আপ্-এ প্রণাম দেওয়ার চেয়ে পাড়ার গুরজনকে অন্তত পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা যাবে, কিংবা গুরজনের আশির্বাদের হাতটা মাথা স্পর্শ করবে। বাংলা ধ্রুপদি ভাষার সম্মান পেয়েছে। উৎসবপ্রিয় বাঙালী এভাবেই তার সামাজিক ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখুক। উৎসব চলুক। উৎসবে আমার মন খারাপ হলেও বাঙালীর দুর্গোৎসবে যেন ভাঁটা না পড়ে।

বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

আত্মসমালোচনা

 আত্মসমালোচনা: অমরনাথ কর্মকার ১৫/০২/২০২৪


আত্মসমালোচনা, নিজের সঙ্গে কথা বলা এগুলো প্রতিটি মানুষের মানসিক স্বাস্থের সুস্থতার জন্য খুব জরুরী। কিন্তু আমাদের সামাজিক পরিবেশ ক্রমশ এমন হয়ে উঠছে যে, যে যার মত চলছে, যা খুশি তাই বলছে অর্থাৎ স্বেচ্ছাচার অধিকাংশ মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠছে। তাদের মধ্যে আত্মসমালোচনা নেই ব'লে স্বেচ্ছাচার লাগামহীন হয়ে পড়ছে ক্রমশ। রাজনীতিকদের মধ্যে এই প্রবণতা যে কি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে, প্রতিদিন খবর দেখলে তা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।  আর সত্যিই তো, নিজের সঙ্গে কি বিষয়ে কথা বলব?   সমাজে মানুষ ক্রমশ নিজস্বতা হারাচ্ছে। মানুষ নিজেই নিজের মধ্যে থাকে না। একটা স্বাধীন দেশের অধিবাসী হয়েও প্রায় প্রত্যেকেই কেমন যেন পরাধীনতার কটু স্বাদ অনুভব করেন। খুব সত্যি বলতে, রাজনীতি সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠছে, গণতন্ত্রের তন্ত্র বড্ড আলগা।  মানুষের স্বেচ্ছাচারিতা, ক্রোধ, প্রতিহিংসাপরায়ণতা, দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আত্মসমালোচনা করাটাও বডড শঙ্কার। এক্ষেত্রে Brain Spellman-এর উদ্ধৃতিটি খুবই প্রাসঙ্গিক  "Talking to myself is okay. But answering back is risky." তাই বোধহয় আমরা আত্মসমালোচনা করতে ভয় পাই।

মুখ চাপা সত্য

 মুখ চাপা সত্য শেষ দিয়ে সত্যের শুরু  নাকি সত্যের চির সমাধি?  নাকি মুখ চাপা সত্যের গোঙানি স্পষ্ট বাক্যে শোনা যাবে একদিন?