বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২২
শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২২
সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০২২
ভাইরাল
ভাইরাল
আজকাল কিছু শব্দ ইন্টারনেট ও বিভিন্ন সামাজিক
মাধ্যমের দৌলতে বিশ্বময় বিপুল জনপ্রিয় যাদের অন্যতম ‘ভাইরাল’ শব্দটি। শহর
থেকে শুরু ক’রে প্রত্যন্ত
গ্রাম বাংলায় আধুনিক প্রজন্মের সবাই ‘ভাইরাল’ শব্দের সঙ্গে পরিচিত। কিছুদিন
আগে একটি সিংহলি গান ‘মানিকে মাগে হিথে..’ ভাইরাল হয়েছিল। অতি সম্প্রতি ভূবন বাদ্যকরের ‘কাঁচা বাদাম’ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু বিষ্ময়ের ব্যাপার হ’ল ইংরেজি
অভিধান অনুযায়ী ‘ভাইরাল’শব্দটি যে অর্থে ব্যবহৃত
হওয়ার কথা এক্ষেত্রে তার সঙ্গে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ নয়। মূলত শাব্দিক অর্থের পরিবর্তে এখানে ভাবার্থই প্রাধান্য পেয়েছে। বিশেষ্য ‘ভাইরাস’-এর গুণবাচক বিশেষণ
হিসাবে ‘ভাইরাল’ শব্দটির জনপ্রিয়তা। আবার আভিধানিক অর্থের ভিত্তিতে, ভাইরাস যেহেতু অতি দ্রুত বিস্তার লাভ করে তাই অতি দ্রুত বিপুল সংখ্যক মানুষের মধ্যে কোন বিষয় অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়া অর্থে ভাইরাল শব্দের ব্যবহার আভিধানিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৭ সালে গুগল, ইউটিউব, ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত বা খোঁজ করা
শব্দগুলোর মধ্যে ভাইরাল শব্দটি অন্যতম।
তবে সামাজিক মাধ্যমে এই ‘ভাইরাল’ শব্দটির ব্যাপক ব্যবহারের একটা ইতিহাস আছে। ২০০০
সালের ৩১ জুলাই মার্কিন
লেখক সেথ গোডিন ‘ফাস্ট কোম্পানি ডট কম’ নামক ওয়েব সাইটে ‘আনলিশিং
দ্য আইডিয়া ভাইরাস’শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন যেখানে একটি লাইন ছিল Have the Idea behind your online experience go viral…
সেই থেকেই ‘ভাইরাল’শব্দটির ভাইরাল হওয়ার সূত্রপাত। আর এখন তো
গ্রামবাংলার মানুষও রানু মন্ডল বা ভূবন বাদ্যকরের
‘ভাইরাল’ হওয়ার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল।
সেইসঙ্গে নেটদুনিয়ায় সর্বক্ষণ চলছে রাতারাতি ভাইরাল হওয়ার ইদুরদৌড়। বিষয়ের ভালো-মন্দ এক্ষেত্রে হয়ত মূল বিচার্য নয়, কত বেশি সংখ্যক
মানুষ তার দর্শক সেটাই বিচার্য । এতে কেউ
হয়ত রাতারাতি সেলিব্রিটি হয়ে উঠছেন । আবার এই
‘ভাইরাল’ হওয়ার কারনেই কেউ বা হয়ে উঠছেন
মানুষের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের পাত্র। ভূবন
বাদ্যকারের ‘কাঁচা বাদাম’ ভাইরাল হয়ে তিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন রাতারাতি, আবার একদা ভাইরাল হওয়া প্রশংসিত গায়িকা রানু মন্ডল পুনরায় ভাইরাল হয়েছেন ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের পাত্রী হিসাবে। সুতরাং এই ভাইরালিজমের ভালো,
মন্দ দুটো দিকই আছে।
‘ভাইরাল’-এর
মত আরোও অনেক শব্দ সামাজিক মাধ্যমের বদান্যতায় বিশ্বময় জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বলা যেতে পারে ইন্টারনেট তথা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের কারনে ভাষাবিজ্ঞানের এক নতুন দিগন্ত
উন্মোচিত হয়েছে। অনেক দেশে এ নিয়ে রীতিমত
গবেষণা শুরু হয়েছে। ইউরোপের ভাষাবিজ্ঞানী
ও গবেষক ডেভিড ক্রিস্টাল ‘ইনটারনেট লিঙ্গুইস্টিক্স’(আন্তর্জালিক
ভাষাবিজ্ঞান) নামে নতুন এক বিষয়ের অবতারণা
করেছেন। তিনি মনে করেন, প্রথাগত শিক্ষার শৃঙ্খলায়
একটি নতুন বিষয়ের
সংযোজন করা খুব সহজ নয়, কিন্তু ইন্টারনেটের
আবির্ভাব ভাষাকে এতটাই প্রভাবিত করেছে যে ইন্টারনেটের ভাষা
নিয়ে গবেষণা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই সমস্ত ভাষার
স্থায়ীত্ব সাময়িক, খুব কম সময়ের ব্যবধানে
এই ভাষা পরিবর্তিত হচ্ছে। সেই কারনেই সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে বাংলাভাষীদের মধ্যে ‘ভাইরাল’ শব্দটিও জনপ্রিয় হয়েছে এবং এই শব্দের বাংলা
প্রতিশব্দ যদি হয়েও থাকে, তবুও ‘ভাইরাল’ ব্যবহারেই বাঙালীরা বেশি স্বছন্দ।
তবে ইন্টারনেট আর সামাজিক মাধ্যম সৃষ্টির আগে কি কোন বিষয় ‘ভাইরাল’ হ’ত না ? হ্যাঁ হ’ত, তবে তা আজকের মত ‘ভাইরাল’ নামে হয়ত পরিচিত ছিল না। কিন্ত কিছু বিষয় বা মানুষ তখনও আচমকা ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠত এবং বিশ্বময় ঝড়ের গতিতে তা ছড়িয়েও পড়ত, তবে আজকের মত বৈদ্যুতিন গতিতে অবশ্যই নয়। এ প্রসঙ্গে অ্যালাবার্ট আইনস্টাইনের জিভ বের করা মজার ছবিটির উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে । ১৮৭৯ সালের ৪ মার্চ প্রচারবিমুখ আইনস্টাইনের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আর্থার স্যাসের কামেরায় বন্দি বিরক্ত আইনস্টাইনের জিভ বের করা ছবি বিশ্বময় যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল তা আজ ‘ভাইরাল’ হওয়া অনেক কিছুকেই হার মানাবে। তবে আজকের দিনে ‘ভাইরাল’ হওয়া অনেক কিছুই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দু’দিন বাদে হারিয়ে যায়। আইস্টাইনের সেই ছবি কিন্তু আজও বিশ্বব্যাপী সমান জনপ্রিয়।
সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২
রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২২
মুখ চাপা সত্য
মুখ চাপা সত্য শেষ দিয়ে সত্যের শুরু নাকি সত্যের চির সমাধি? নাকি মুখ চাপা সত্যের গোঙানি স্পষ্ট বাক্যে শোনা যাবে একদিন?
-
এক লাইনের কাব্যঃ অ.না.ক. ২১/০৩/২০১৭ এক লাইনেও কাব্য হয় দু'লাইনে ছন্দময় ।